মার্কিন নিষেধাজ্ঞার চাপে রাশিয়ার কোম্পানি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে আরোপিত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার কোম্পানিগুলোর ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এতে দেশটির সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ফিচ রেটিংয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স।
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত ৬ এপ্রিল নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ। নতুন এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে সাত প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ১২টি কোম্পানি। এছাড়া রুশ সরকারের ১৭ জ্যেষ্ঠ ও প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন কংগ্রেস। ব্যবসায়ী ও জ্যেষ্ঠ এ কর্মকর্তারা রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
রাশিয়ার অ্যালুমিনিয়াম টাইকুন হিসেবে পরিচিত অলিগ ডেরিপাস্কা ও আইনজীবী সুলেইমান কেরিমভও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন। সুলেইমান কেরিমভ ও তার পরিবারের সদস্যরা রাশিয়ার স্বর্ণের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন।
ফিচ রেটিং তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। দেশটির মুদ্রা রুবলের মান কমছে। তালিকাভুক্ত চার কোম্পানির শেয়ারদর পড়ে গেছে। নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত এ কোম্পানিগুলো হলো রুসাল, ইএন প্রাল্র গ্রুপ, জিএজেড গ্রুপ ও পলইয়াস।
ইউক্রেন সংকটের সময়ে মস্কো ও ক্রিমায়ার ভূমিকায় ২০১৪ সালে প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। তাতে তেমন একটা প্রভাব না পড়লেও সাম্প্রতিক সময়ে আরোপ করা এ নিষেধাজ্ঞায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে।
রয়টার্সের হিসাবে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের এক সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার প্রধান তিন কোম্পানি বলছে, তাদের ৭৫০ কোটি ডলারের ক্ষতি হতে পারে।
এদিকে দীর্ঘদিন শ্লথগতি থাকার পর রাশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত বছর দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছিল এক দশমিক পাঁচ শতাংশ। এ বছর প্রবৃদ্ধি দুই শতাংশ ছাড়াবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এ প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী স্টিভ মুচিন বলেছেন, রাশিয়া বিশ্বজুড়ে অন্যায় কার্যক্রম চালাচ্ছে। দেশটি ক্রিমিয়া দখল করেছে, পূর্ব ইউক্রেনকে অস্থিতিশীল করছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদকে সামরিক অস্ত্র সরবরাহ করছে, যা দিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চলছে। এছাড়া পশ্চিমা দেশের গণতন্ত্রকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে রাশিয়া। এসব কারণেই তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করছেন, তখনই এ সিদ্ধান্ত নিল মার্কিন কংগ্রেস।
রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান কনস্টানটেইন কোসাসেভ সম্প্রতি বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি অবন্ধুত্বসুলভ। এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও জ্বালানি খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে দাবি করেন তিনি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০