শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে হাউসের পর সিনেটেও পাস হলো ঋণসীমা তুলে দেওয়া সংক্রান্ত বিল। এর মাধ্যমে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেলো বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির রাষ্ট্রটি। নিম্নকক্ষে পাসের পরের দিনই বৃহস্পতিবার (১ জুন) রাতে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বা সিনেটে ৬৩ ভোট পেয়ে বিলটি পাস হয়। বিপরীতে ভোট ছিলো ৩৬টি। খবর: বিবিসি
বিলটিতে ১১টি সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সিনেট সদস্যরা। তবে এর কোনোটিই গ্রহণ করা হয়নি। ১০০ সদস্যের সিনেটে বিল পাস হতে প্রয়োজন ছিল ৬০টি ভোট। বিলটির পক্ষে ডেমোক্র্যাট দলের ৪৪ জন, ১৭ জন রিপাবলিকান ও স্বাধীনভাবে ভোট দিয়েছেন ২ জন সদস্য।
এখন বিলটিতে শুধু প্রেসিডেন্টের সই করা বাকি। যুক্তরাষ্ট্রের ৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণ রয়েছে। অর্থনীতিকে সচল রাখতে এই ঋণের সীমা বাড়ানো প্রয়োজন ছিল। বিলটিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষর করার পর আইনে পরিণত হবে। অর্থনীতির সংকটে পড়ার আশঙ্কা দূর হবে। বিষয়টি নিয়ে ডেমোক্র্যাট নেতা চাক স্কামার সিনেটে বলেন, ‘বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ায় এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলা যাবে।’
২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ঋণসীমা স্থগিত থাকবে। আগামী দুই বছরের বাজেটে ব্যয় কমানো, কোভিড তহবিলে থাকা অব্যবহৃত অর্থ অন্য খাতে ব্যবহার, জ্বালানিখাতে ব্যয় বৃদ্ধি এবং দরিদ্রদের জন্য খাদ্য সহায়তার বিষয়ে বলা হয়েছে বিলটিতে। ফেডারেল সরকারের ঋণসীমা বাড়াতে শনিবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় অস্থায়ী চুক্তির মাধ্যমে বিল তৈরি করেন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দলের দুই নেতা জো বাইডেন ও কেভিন ম্যাকার্থি।
মঙ্গলবার কংগ্রেসের বাজেট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিলটির মাধ্যমে আগামী ১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় কমবে প্রায় দেড় ট্রিলিয়ন ডলার। বিলটি আইনে পরিণত হলে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ঋণের সুদ প্রায় ১৮ হাজার ৮০০ কোটি ডলার কমবে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণখেলাপি হওয়া এড়াতে প্রতিনিধি পরিষদে ভোট দিয়েছে দেশটির কংগ্রেসের নিন্মকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ। গত বুধবার এ-সংক্রান্ত বিলের ওপর রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে ভোটাভুটি হয়। বিলটির পক্ষে ৩১৪ ভোট পড়ে, বিপক্ষে ১১৭ ভোট।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণসীমা ৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন বা ৩১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার। গত জানুয়ারিতে এই ঋণসীমা ছুঁয়ে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। এর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার নানা ধরনের বিশেষ ব্যবস্থা অবলম্বন করে দেশটির বিভিন্ন দেনা পরিশোধ করে আসছে। ঋণসীমা বাড়ানোর বিষয়ে ওয়াশিংটনে অচলাবস্থা চলছিল। বাইডেন চান ধনীদের করহার বৃদ্ধিসহ নানাভাবে কর সংগ্রহ বৃদ্ধি করে ঋণসীমা বৃদ্ধি করতে, কিন্তু রিপাবলিকানরা কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট হ্রাসের বিষয়ে নাছোড়বান্দা। এমনকি ধনীদের ওপর কর বৃদ্ধির বিপক্ষেও তারা।