Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 5:03 am

মার্চেই বৈদ্যুতিক গাড়ি সরবরাহ শুরু করবে শাওমি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীনের স্মার্টফোন জায়ান্ট শাওমি চলতি মাসেই তাদের প্রথম বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল বা ইভি) বাজারে সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার এক উইবো পোস্টের মাধ্যমে তথ্যটি নিশ্চিত করেছে শাওমি কর্তৃপক্ষ। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ও প্রতিযোগিতামূলক অটো বাজারে প্রবেশ করেছে কোম্পানিটি। খবর: রয়টার্স।

শাওমি পোস্টে দেয়া বিবৃতিতে জানিয়েছে, দেশব্যাপী ২৯টি শহরে থাকা তাদের ৫৯টি স্টোর নতুন স্পিড আল্ট্রা সেভেন (এসইউসেভেন) সেডানের অর্ডার বা ক্রয়াদেশ নেবে। নতুন ইভির স্টিকার ট্যাগটি সর্বজনীন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী ২৮ মার্চ এর উদ্বোধন হবে বলে পোস্টে বলা হয়েছে। শাওমির নতুন এই গাড়ির বাজারমূল্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি। উদ্বোধনের সময় এর বিক্রয়মূল্য জানানোর কথা রয়েছে।

চীনের পঞ্চম বৃহত্তম স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানি শাওমি। কোম্পানিটির জনপ্রিয় মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সঙ্গে গাড়ির অপারেটিং সিস্টেম তাদের বর্তমান গ্রাহকদের আকর্ষণ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

শাওমি বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি অটোমেকারের একটি হওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে গত বছরের ডিসেম্বরে এসইউসেভেন উম্মোচনের সময় ঘোষণা দেন শাওমির সিইও লেই জুন। লেই দাবি করেন, এসইউভিতে ‘সুপার ইলেকট্রিক মোটর’ প্রযুক্তি রয়েছে, যা টেসলা ও পোরশের ইভির চেয়ে দ্রুত ত্বরণ সরবরাহ করতে সক্ষম।

লেই উইবো পোস্টে বলেছেন, শাওমির গাড়িগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হল স্মার্ট প্রযুক্তি যা তাদের গাড়িগুলোকে অন্য গাড়ি থেকে আলাদা করেছে।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ১৪ বছর আগে যেমন শাওমির স্মার্টফোনগুলো শূন্য থেকে শুরু করে গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সেভাবেই শাওমির গাড়িগুলো শূন্য থেকে শুরু করে দ্রুত গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে।

দুই লাখ গাড়ি নির্মাণের বার্ষিক ক্ষমতাসহ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অটোমেকার বিএআইসি গ্রুপের বেইজিং কারখানায় একটি ইউনিটের মাধ্যমে শাওমির গাড়িগুলো উৎপাদিত হবে। ২০২১ সাল থেকে শাওমির স্মার্টফোনের চাহিদা স্থবির হয়ে পড়ায় কোম্পানিটি ব্যবসায় বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টায় ইভির মাধ্যমে ঘুড়ে দাঁড়াতে চাচ্ছে।

চীনে ২০২৩ সালে ইভি বিক্রির হার ছিল ২১ শতাংশ, যেখানে ২০২৪ সালের শুধু জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ইভি বিক্রয় ১৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে। তাই দেশটির ইভি বাজারের নতুন প্রতিযোগী হিসেবে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন পেতে ইতোমধ্যে শাওমি এক দশকের মধ্যে গাড়ি নির্মাণের জন্য ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে।

চীনের বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচেয়ে পরিচিত নাম টেসলা। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের বিওয়াইডি বা ‘বিল্ড ইওর ড্রিম’। উৎপাদনের প্রান্তিক ভিত্তিতে হিসাব করলে, বিওয়াইডি ইতোমধ্যে টেসলাকে ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বজুড়ে এ ধরনের গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান দ্বিতীয়। তবে বিওয়াইডির মূল সাফল্য অন্য জায়গায়Ñএটি দেখাচ্ছে চীনা গাড়িশিল্প কতটা এগিয়েছে। গাড়ি রপ্তানিতে চীন এরই মধ্যে জাপানকে ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় গাড়ি রপ্তানিকারক দেশ চীন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির এই দেশ এখন নানা সমস্যায় জর্জর। তবে গাড়িশিল্পই এখন তাদের সবচেয়ে উজ্জ্বল দিক।

গত কয়েক মাসে বিওয়াইডি তাদের গাড়ির দাম ব্যাপক হারে কমিয়ে দিয়েছে। ইলন মাস্কের গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান টেসলার বিত্রয়মূল্যেও এর প্রভাব পড়েছে। ফলে চীনে টেসলা গাড়ির দাম হাজার ডলার থেকেও বেশি কমাতে বাধ্য হয়েছেন মাস্ক।

বুধবার পুঁজিবাজারে শাওমির শেয়ারের দাম ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটি। এর দাম শেয়ারের দাম হয়েছে ১ ডলার ৯১ সেন্ট। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবারে হ্যাংসেং সূচকে এর শেয়ারের দাম বাড়ে ৩ দশমিক ০৫ শতাংশ।