নিজস্ব প্রতিবেদক: অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার রোধকল্পে তিতাস গ্যাস কোম্পানি গত মার্চে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অবৈধ লাইন অপসারণ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে বকেয়া বিল ও অবৈধ সংযোগ দেওয়ায় সাত শিল্প এবং ২১ বাণিজ্যিক অবৈধ গ্যাস পাইপলাইন বিচ্ছিন্নসহ ২৬ হাজার ৫৩৩টি অবাসিক এলাকার চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কর্তৃপক্ষ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযানে অবৈধভাবে রাইজার উত্তোলন করে গ্যাস সংযোগ গ্রহণ করায় ঢাকার কদমতলী এলাকায় গত ৫ মার্চ একটি বেকারি ও একটি মশার কয়েল কারখানার গ্যাস সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ সময় বেকারি কারখানার কাছ থেকে এক লাখ টাকা এবং মশার কয়েল কারখানার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করায় গাজীপুর এলাকায় ১৪ মার্চ সামী টেক্সটাইল লিমিটেড ও একটি নামবিহীন হোটেল, কামরাঙ্গীরচর এলাকায় ২৭ ও ২৯ মার্চ রবিন ফুড প্রোডাক্টস ও প্রিয় কনফেকশনারির গ্যাস সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়। সামী টেক্সটাইল ও প্রিয় কনফেকশনারিকে এক লাখ টাকা করে, রবিন ফুড প্রোডাক্টাসকে ৫০ হাজার টাকা ও একটি নামবিহীন হোটেলকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অতিরিক্ত লোড ব্যবহার করায় ২১ মার্চ গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় ইএইচ ফেব্রিকস, কোনাবাড়ী এলাকায় হর্নবিল অ্যাপারেলস (ক্যাপটিভ পাওয়ার) ও ২৮ মার্চ সোনারগাঁও এলাকায় অনন্ত ডেনিম টেকের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ৮ মার্চ গাজীপুর এলাকায় ইকো ওয়াশিং ও নিশা অ্যাপারেলস, হাউজ লাইনে বুস্টার ব্যবহার করায় ২১ মার্চ টঙ্গী এলাকায় সিমটেক্স এবং কম্প্রেসার ব্যবহার করায় ২৮ মার্চ জিঞ্জিরা এলাকায় ইসমাইল প্রিন্ট কৌটার ফ্যাক্টরির গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
তাছাড়া অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করায় বন্দর এলাকায় ৮ মার্চ মেসার্স মায়ের দোয়া ভাণ্ডারী হোটেল, ১৪ মার্চ নিউ কোবরা কয়েল ফ্যাক্টরি, মোকতার হোটেল, খাজা হোটেল, ১৫ মার্চ ভাণ্ডারী হোটেল, সোনারগাঁও এলাকায় ১৪ মার্চ সবুজ পাতা রেস্টুরেন্ট ও মোহাম্মদীয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, ১৮ মার্চ হোসেন রেস্তোরাঁ, একবেলা রেস্তোরাঁ, মায়ের দোয়া মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, তাহের হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, বিসমিল্লাহ বেকারি, বটপাতা হোটেল ও আমীর হোসেন হোটেল, ২৯ মার্চ জেড অ্যান্ড কে কোম্পানি ও এসএস কেমিক্যালের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
বকেয়া বিলের কারণে ১৩ মার্চ ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় জে কে ফুড প্রোডাক্ট, মানিকগঞ্জ এলাকায় ১৫ মার্চ মেসার্স সুলতান বেকারি, ২০ মার্চ মেসার্স আল-মোবারক হোটেল, ২৯ মার্চ মেসার্স দিলদার ফুড প্রোডাক্টস, সাভার এলাকায় ৭ মার্চ মেসার্স বিশ্বাস সিনথেটিক্স (হাউজ লাইন বুস্টার স্থাপন), ১৪ মার্চ মেসার্স ফাহামি ইন্ডাস্ট্রিজ ও ১৮ মার্চ মেসার্স মিরাকল এক্সেসরিজ, মেসার্স আল মদিনা ট্যানারি, মেসার্স সমতা কমপ্লেক্স, মেসার্স আরব চিড়া মিল, মেসার্স হট ড্রেস লিমিটেড, গাজীপুর এলাকায় মেসার্স এএমসি সুয়েটারস, ১৯ মার্চ কোনাবাড়ীর বিসিক এলাকায় মেসার্স আক্তার ক্যাপস, ১৪ মার্চ কালিয়াকৈরে রাজীব মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, ফতুল্লা এলাকায় ৬ মার্চ মোল্লা পেপার প্রোডাক্টস, ১২ মার্চ ভাই ভাই রি-রোলিং মিল্স, ২০ মার্চ জাকির মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ ও ২৮ মার্চ বুশরা রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড মিনি চাইনিজ, ২১ মার্চ তেজগাঁও এলাকায় অ্যাপারেল এইড ও শোভন ওয়াশিং প্লান্ট এবং ২৯ মার্চ জিঞ্জিরায় মেসার্স আসলাম লন্ড্রির গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযানকালে গাজীপুর, মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া, সোনারগাঁও, তুরাগ থানা, উত্তরখান ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বিভিন্ন এলাকায় ৬৯.২০ কিমি অবৈধভাবে স্থাপিত গ্যাস পাইপলাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এর ফলে প্রায় ২৬ হাজার ৫৩৩টি চুলার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৩৪ জন অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীকে সর্বমোট সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা করেন।
