Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 1:24 pm

মার্চ পর্যন্ত বাড়ল বৈদেশিক লেনদেনে নীতি সহায়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা পরিস্থিতি মোকবিলায় বৈদেশিক বাণিজ্যের লেনদেনে দেওয়া নীতি সহায়তার সময়সীমা বৃদ্ধি করল বাংলাদেশ ব্যাংক। বাকিতে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রী প্রভৃতি আমদানির ক্ষেত্রে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেওয়া সুযোগের সময়সীমা ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি একই সময় পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে সাপ্লায়ার্স/বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের দায় পরিশোধের সময়সীমাও।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত তিনটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

বাংলাদেশে কার্যরত সব অথোরাইজ্ড ডিলারের পাঠানো ওই সার্কুলারে বলা হয়, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রী প্রভৃতি আমদানির ক্ষেত্রে বিদেশি ব্যাংকের রিপেমেন্ট গ্যারান্টি অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই পাঁচ লাখ মার্কিন ডলার অগ্রিম আমদানি মূল্য বিদেশে পাঠানো যাবে। জীবনরক্ষাকারী ওষুধ আমদানির ইউজেন্স সময় ৯০ দিন থেকে বৃদ্ধি করে ১৮০ দিনে উন্নিত করা হয়েছে। উৎপাদন উপকরণাদি এবং কৃষি উপকরণাদি ও রাসায়নিক সার আমদানির ইউজেন্স সময় উন্নীত করা হয়েছে ১৮০ দিন থেকে ৩৬০ দিনে। আলোচ্য সময়ের মধ্যে রিয়ালাইজেশন ক্লজ-যুক্ত ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র/ইউজেন্স ঋণপত্র স্থাপনের সাধারণ প্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রায় অভ্যন্তরীণ ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের আওতায় উপকরণাদি সরবরাহের বিপরীতে পরিশোধ কার্যক্রম ব্যাংলাদেশ ব্যাংকে পরিচালিত এফসি ক্লিয়ারিং হিসাবের মাধ্যমে নিষ্পত্তির নির্দেশনা শিথিল করে এডি ব্যাংকের নস্ট্রো হিসাবের মাধ্যমে সম্পাদনের অধিকার দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অপর একটি সার্কুলারের মাধ্যমে সাপ্লায়ার্স/বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে স্থাপিত ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের দায় পরিশোধের নিমিত্তে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের আওতায় ১৮০ দিন সময়ের জন্য পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সরবরাহকারী কর্তৃক ইউজেন্স সময় বৃদ্ধি কিংবা বিদেশি অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ওই ১৮০ দিনের জন্য পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা না পাওয়ার বিষয় সম্পর্কে অনুমোদিত ডিলার শাখাকে নিশ্চিত হতে হবে।

এছাড়া অপর একটি সার্কুলারে বলা হয়, সাপ্লায়ার্স/বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় আমদানির ক্ষেত্রে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে দায় পরিশোধের ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হলো।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা বৈদেশিক বাণিজ্যে স্বস্তি প্রদান করবে। আশা করা যায়, করোনার প্রভাব দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সহায়তাগুলো আবার বর্ধিত করবে। নীতি সহায়তা বর্ধিত করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, চলমান পরিস্থিতির কারণে নীতি সহায়তাগুলোর সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, করোনার কারণে ব্যবসায়ীদের যে ক্ষতি হয়েছে, বিষয়টি অনুধাবন করেই বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি-রপ্তানিতে বিভিন্ন নীতি সহায়তা দিয়েছে। তবে এখনও ব্যবসায়ীরা সেই ক্ষতি কাটিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য পুরোপুরি শুরু করতে পারেনি। রপ্তানি বাজারও স্থিতিশীল হয়নি। কারণ এখন যে শিপমেন্ট হচ্ছে, এর পেমেন্ট ক্রেতারা ছয় মাস পরে দেবে এসব বিবেচনা করে নীতি সহায়তার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এটি ব্যবসায়ীদের টিকে থাকার একটি সুযোগ এজন্য আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।