Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 9:09 pm

মার্চ পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ৪২ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে সরকারের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) মোট বরাদ্দের ৪২ দশমিক ৩০ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বাস্তবায়নে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকলেও নবম মাসে এসে এডিপি বাস্তবায়নে অনেকটা গতি সঞ্চার হয়েছে। প্রথম আট মাসে বাস্তবায়ন হয়েছিল ৩১ দশমিক ১৭ শতাংশ।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) গতকাল আরএডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস ২০২৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আরএডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে এক লাখ সাত হাজার ৬১২ কোটি টাকার। এটি অর্থবছরের মোট আরএডিপি বরাদ্দের ৪২ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর আগের অর্থবছর প্রথম ৯ মাসে আরএডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৪১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ বাস্তবায়ন হার ছিল ৪৫ দশমিক শূন্য পাঁচ  শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৪১ দশমিক ৯২ শতাংশ। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৪৫ দশমিক শূন্য আট শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দুই লাখ ৫৪ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন এক লাখ ৬১ হাজার ৫০০ কোটি, বৈদেশিক ঋণ বা প্রকল্প সাহায্য ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি এবং বিভিন্ন সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৯ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। বাস্তবায়নের হার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সরকারি অর্থায়ন অংশে বাস্তবায়ন হার সবচেয়ে কম। এক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হয়েছে ৩৬ দশমিক ১৪ শতাংশ বা ৫৮ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। এটি প্রথম ৯ মাসের গড় বাস্তবায়নের চেয়ে কম। বৈদেশিক সহায়তা অংশে বাস্তবায়িত হয়েছে ৫২ দশমিক ৭৭ শতাংশ বা ৪৪ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। আর সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন অংশে বাস্তবায়িত হয়েছে ৫৫ দশমিক ১৫ শতাংশ বা পাঁচ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এডিপি বাস্তবায়ন পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বাস্তবায়নে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। ৩১৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বরাদ্দের মধ্যে ৯ মাসে সংস্থাটি বাস্তবায়ন করেছে মাত্র ৩৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এটি মোট বরাদ্দের মাত্র ১৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ। বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। এক হাজার ৫১৫ কোটি টাকার বরাদ্দের বিপরীতে ৯ মাসে সংস্থাটি বাস্তবায়ন করেছে ২৬৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এটি মোট বরাদ্দের মাত্র ১৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে রয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তারা এক হাজার ৪৫৮ কোটি টাকার বরাদ্দের বিপরীতে বাস্তবায়ন করেছে ২৮৪ কোটি টাকা। এটি মোট বরাদ্দের ১৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এছাড়া পিছিয়ে থাকা মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ৯ মাসে তাদের বরাদ্দের ৬০১ কোটি টাকার মধ্যে বাস্তবায়ন করতে পেরেছে ১২৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। এটি মোট বরাদ্দের ২১ শতাংশ।

বাস্তবায়নে সবচেয়ে এগিয়ে থাকার সংস্থার তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এক্ষেত্রে  সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চলতি অর্থবছরের আরএডিপিতে সংস্থারটির বিপরীতে বরাদ্দের পরিমাণ ৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা। প্রথম ৯ মাসে সংস্থাটি বাস্তবায়ন করেছে পাঁচ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৯৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। বাস্তবায়ন হারে এর পরের অবস্থানে রয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বিভাগটি তিন হাজার ৮৪১ কোটি ৯৯ লাখ টাকার বরাদ্দের বিপরীতে বাস্তবায়ন করেছে দুই হাজার ৮৬০ কোটি ৩২ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৭৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। বাস্তবায়নে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। সংস্থাটির বাস্তবায়নের হার ৭১ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর চতুর্থ অবস্থানে থাকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরএডিপি বাস্তবায়ন হার ৬৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ।