মার্জিন ঋণের সময় নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে বিনিয়োগকারীরা

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে প্রথম ৩০ কার্যদিবস শেয়ার ক্রয়ের বিপরীতে মার্জিন ঋণ পান না বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি ক্যাটেগরি পরিবর্তন হলেও এই নিয়ম রক্ষা করা হয়, কিন্তু কবে থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের বিপরীতে মার্জিন ঋণ প্রদান কার্যকর হবে, তা জানানো হয় না। ফলে বিনিয়োগকারীরা বিষয়টি জানতে পারেন না। বিষয়টি জানার জন্য হয় তাদের হিসাব রাখতে হয়, তা না হলে হাউজগুলোর দ্বারস্থ হতে হয়।
বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, নতুন ও ক্যাটেগরি পরিবর্তন হওয়া কোম্পানির মার্জিন ঋণ কবে থেকে কার্যকর হবে, এ বিষয়ে স্টক এক্সচেঞ্জ কিংবা কোম্পানির পক্ষ থেকে যদি ঘোষণা আসে তাহলে তাদের প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হয়। অন্যদিকে এ ধরনের ঘোষণা না থাকায় বিনিয়োগকারীরা যথাসময়ে মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ার কিনতে পারেন না। ফলে বেশিরভাগ সময়ই কাক্সিক্ষত কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারেন না তারা।
২০০৯ সালের ১ অক্টোবর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এক আদেশে পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরুর প্রথম ৩০ কার্যদিবস ও ক্যাটেগরি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রথম ৩০ কার্যদিবস কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ে মার্জিন ঋণ সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছিল। এর তিন বছর পর ২০১২ সালের ২৮ নভেম্বর মার্জিন ঋণ সুবিধা রহিতকরণে আগের সিদ্ধান্ত বাতিল করে বিএসইসি। আর তাতে নতুন কোম্পানি ও কোম্পানির ক্যাটেগরি পরিবর্তনের প্রথম কার্যদিবস থেকে ঋণ সুবিধা পেতেন বিনিয়োগকারীরা। এতে শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। ফলে পরে আবারও নতুন ও ক্যাটেগরি পরিবর্তিত হওয়া কোম্পানির বিপরীতে ৩০ কার্যদিবস মার্জিন সুবিধা বন্ধ থাকার নির্দেশনা আসে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৫৫৭তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে জয়তুন সিকিউরিটিজ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, অনেক বিনিয়োগকারী আছেন যারা মার্জিন ঋণ শুরুর দিনই ঋণ নিয়ে নতুন কোম্পানির শেয়ার কিনতে চান। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জ কিংবা কোম্পানির পক্ষ থেকে ঋণ সুবিধার কোনো ঘোষণা না থাকায় অনেক সময় তারা এটি করতে পারেন না। পরে ওই কোম্পানির শেয়ার বেশিরভাগ সময়ই বাড়তি দামে কিনতে হয়।
সাধারণত নতুন কোম্পানির শেয়ারে মার্জিন সুবিধা চালু হলে তার দর বাড়তে দেখা যায়। সে কারণেই এমনটি ঘটে। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে মার্জিন ঋণ শুরুর সময়কাল ঘোষণা করা উচিত।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এক কর্মকর্তা বলেন, এটি আমাদের দেখার বিষয় নয়, কারণ এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। নিয়ম অনুযায়ী তালিকাভুক্তির প্রথম থেকে ৩০ কার্যদিবস এবং ক্যাটেগরি পরিবর্তিত হওয়ার ৩০ কার্যদিবস মার্জিন সুবিধা বন্ধ থাকে। এ বিষয়ে বিনিয়োগকারীকেই হিসাব রাখতে হবে।
অন্যদিকে কোনো নতুন কোম্পানির শেয়ার যদি শুরুতেই অতিমূল্যায়িত হয় এবং ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ওই শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ৪০ অতিক্রম করে, তবে ওই প্রতিষ্ঠানটির মার্জিন সুবিধা পাবে না। একইভাবে যদি কোনো কোম্পানির ক্যাটেগরি পরিবর্তনের দিন ওই শেয়ারের পিই ৪০ অতিক্রম করে তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানও মার্জিন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ আমাদের দেশে কোনো শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত ৪০-এর বেশি হলে ওই শেয়ারকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এজন্য বিনিয়োগকারীদের সুবিধার কথা ভেবে ওই শেয়ারে মার্জিন সুবিধা বন্ধ রাখা হয়।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০