Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 6:07 pm

মার্জিন কমানোর পরও ঋণের সুদহার ছাড়াল ১৩ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকঋণের সুদহারের মার্জিন কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মার্জিন ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৩ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপরও মার্চে ব্যাংকঋণের সুদহার ১৩ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে, যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ। মূলত ট্রেজারি বিলের সুদহার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় সুদহার বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আইএমএফের ঋণের শর্ত পরিপালনের জন্য গত জুলাই থেকে সুদহারের নতুন ব্যবস্থা চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে গত জুন পর্যন্ত সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৯ শতাংশ।

ব্যাংকঋণের সুদহার নির্ধারণে স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল ব্যবস্থা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারের ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের গড় সুদহারের ভিত্তিতে এ সুদ নির্ধারিত হচ্ছে। প্রতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক স্মার্ট সুদহার প্রকাশ করে।

সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি শেষে স্মার্ট রেট বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ। এর সঙ্গে বাড়তি ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ যুক্ত করে ঋণের সুদহার নির্ধারণ করতে পারে ব্যাংকগুলো। সেই হিসাবে চলতি মার্চের জন্য ঋণের সুদ বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ, যা গত আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

প্রাক?-জাহাজীকরণ রপ্তানি ঋণ এবং কৃষি ও পল্লিঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্প্রেডের সঙ্গে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে, যা আগে ছিল ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ফলে প্রাক-জাহাজীকরণ রপ্তানি ও কৃষিঋণে সুদহার হবে ১২ দশমিক ১০ শতাংশ।

তবে ব্যাংক চাইলেই পুরোনো গ্রাহকদের কাছে এখনই বেশি সুদ নিতে পারবে না। এজন্য অপেক্ষা করতে হবে। একাধিক ব্যাংকার জানান, স্মার্ট রেটের ভিত্তিতে বর্তমানে প্রতি মাসে যে সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, তা নতুন গ্রাহককে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে কখনও কখনও কার্যকর করা যাচ্ছে। কিন্তু পুরোনো গ্রাহকের বেলায় এ বাড়তি সুদহার তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয় না। কারণ, পুরোনো ঋণের সুদহার ছয় মাস পরপর সমন্বয় করা হয়।

অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি সুদহার হিসেবে পরিচিতি রেপোর সুদহার বাড়িয়ে গত ১৭ জানুয়ারি ৮ শতাংশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া সরকারের ঋণ চাহিদার পুরোটাই এখন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। এর আগে সরকারের ঋণ চাহিদার বেশিরভাগই সরবরাহ করছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি ডলার বিক্রির বিপরীতে বাজার থেকে টাকা উঠে আসা অব্যাহত আছে। সব মিলিয়ে বাজারে তারল্য সংকট তৈরি হয়ে ট্রেজারি বিলের সুদহার দ্রুত বাড়ছে। বর্তমানে ৯১ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলে সুদহার ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ। এছাড়া ১৮২ ও ৩৬৪ দিনের বিলের সুদহার দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ; যা কয়েক মাস আগেও ৭ শতাংশে ছিল। দ্রুত ট্রেজারি বিলের সুদহার বাড়াতে আমানতের সুদহারও বাড়ছে।