শেয়ার বিজ ডেস্ক : মালদ্বীপে জরুরি অবস্থা জারির কিছু সময়ের মধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন দেশটির প্রধান বিচারপতি। আরও আটক হয়েছেন প্রায় তিন দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা সাবেক রাষ্ট্রপতি মামুন আবদুল গাইয়ুুম। বিবিসির সংবাদদাতা অলিভিয়া ল্যাঙ জানিয়েছেন, মালদ্বীপে মানুষ ভীত-শঙ্কিত অবস্থায় আছে। রাত থেকে সুপ্রিম কোর্ট ভবন ঘিরে রেখেছে পুলিশ। আদালতে যেসব বিচারপতি ছিলেন, তারা সবাই সেখানে আটকে রয়েছেন।
দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া একটি ঐতিহাসিক আদেশকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। দেশটির বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হুসনু আল সুদ বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সুপ্রিম কোর্ট ঘিরে রেখেছে। ফলে বিচারকরা ভেতরে আটকা পড়েছেন। তাদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে না। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম মুয়াজ আলিও জরুরি অবস্থা জারির খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সংবিধানের ২৫৩ অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতাবলে সোমবার থেকে ১৫ দিনের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
জরুরি অবস্থা জারির মধ্য দিয়ে সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার ও আটক করার ক্ষেত্রে মালদ্বীপের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একতরফা ক্ষমতা দেওয়া হলো। এতে দেশটিতে চলমান সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হলো। এর আগে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন সুপ্রিম কোর্টকে তাদের দেওয়া কয়েকটি আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট বরাবর লেখা চিঠিতে এ অনুরোধ জানানো হয়।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট বিরোধী ৯ নেতার বিরুদ্ধে আনা সরকারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তাদের মুক্তির নির্দেশ দেয়। এছাড়া গত বছর সুপ্রিম কোর্টের আদেশে বরখাস্ত হওয়া বিরোধী দলের ১২ সংসদ সদস্যকেও পুনর্বহাল করার আদেশ দেওয়া হয়। এসব আদেশ বাস্তবায়ন হলে প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন অভিশংসিত হতে পারেন বলে গুঞ্জনে রোববার বাতিল করা হয় সোমবারের ঘোষিত পার্লামেন্ট অধিবেশন। সোমবার দেশটির সরকার সেখানে ১৫ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে সংসদ স্থগিত করে দেওয়ার পরই শুরু হয় ধরপাকড়।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের সৎ ভাই সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুম। তার বিরুদ্ধেও সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়। একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতিকে গ্রেফতারের খবর জানা যায়।