নাজমুল ইসলাম ফারুক : মুনাফা কমছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘মালেক স্পিনিং লিমিটেড’-এর। কোম্পানির চলতি হিসাব বছরের গত নয় মাসে (জুলাই ২০১৬-মার্চ ২০১৭) মুনাফা কমেছে প্রায় আট কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম বাড়ায় মুনাফা কমেছে বলে দাবি করছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
বস্ত্র খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, কয়েক মাস ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারে টানা বাড়ছে তুলার দাম। তবে গত জানুয়ারি থেকে এর মূল্য আরও বাড়ছে। এর প্রভাব পড়েছে বস্ত্র খাতে।
মুনাফা কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ‘মালেক স্পিনিং লিমিটেড’-এর মুখপাত্র কামরুজ্জামান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের (তুলা) দাম বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিটি মন্দার কবলে পড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে মুনাফায়।’
‘তবে পরিচালনা পর্ষদ মন্দার কবল থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে’ বলে জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে প্রতি পাউন্ড তুলার দাম ছিল ৭৭ দশমিক ৮৬ ইউএস সেন্টস। গত মার্চে প্রতি পাউন্ড তুলার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ দশমিক ৭৮ ইউএস সেন্টস। মাত্র সাত মাসে প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে তুলার দাম।
‘মালেক স্পিনিং লিমিটেড’-এর চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে কোম্পানির কর-পরবর্তী মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৮১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কর-পরবর্তী মুনাফার পরিমাণ ছিল ২৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং ইপিএস ছিল এক টাকা ২২ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মুনাফার পরিমাণ কমেছে প্রায় আট কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ৪১ পয়সা।
নয় মাসে কোম্পানির পণ্য বিক্রি হয়েছে ৭২৯ কোটি টাকা এবং কস্ট অব গুডস সোল্ড পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৬৫ কোটি টাকা। আগের বছর একই সময় পণ্য বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬৯২ কোটি টাকা এবং কস্ট অব গুডস সোল্ডের পরিমাণ ছিল ৬২০ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে পণ্য বিক্রি বেড়েছে প্রায় পাঁচ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং কস্ট অব গুডস সোল্ড দাম বেড়েছে প্রায় সাত দশমিক ২৭ শতাংশ।
ব্যবসায় মন্দা পরিস্থিতি থাকলে কোম্পানিটির শেয়ারদর গত মার্চে ২৫ টাকা ৮০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে লেনদেন। গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ২০ টাকা ৬০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারদর সর্বনি¤œ ১৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা ৮০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে।
লভ্যাংশের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কোম্পানিটি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর দুই বছর ১০ শতাংশ করে বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। এরপর থেকে ১০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত সমাপ্ত বছরেও একই পরিমাণ লভ্যাংশ দিয়েছে মালেক স্পিনিং মিলস লিমিটেড।
পুঁজিবাজারে ২০১০ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ৫৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ১৯ কোটি ৩৬ লাখ। এর মধ্যে পরিচালকদের কাছে ৪৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৯ দশমিক ৭২ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে চার দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২১ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
Add Comment