Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 2:11 am

মাল্টা চাষে রঙিন কৃষকের ভুবন

বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে এক সময় মাল্টা চাষ হলেও এখন আর তা পাহাড়ে সীমাবদ্ধ নেই। এরই মধ্যে সমতলে মাল্টা চাষ করে সফল হয়েছেন কিশোরগঞ্জ সদরের মহিনন্দ ইউনিয়নের ভদ্রপাড়া গ্রামের আবু বকর সিদ্দিক। রঙিন হয়েছে তার ভুবন।
মাল্টা খেতে ছোট-বড় সবারই প্রিয় বলা যায়। এর পুষ্টিগুণ অনেক। তাই মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হন কৃষক সিদ্দিক। অল্প সময়ে তার গাছে ফলটি ধরে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে সবুজ বর্ণের মাল্টা ঝুলছে গাছগুলোয়। মাত্র দেড় বছরে সফল হন তিনি। সিদ্দিকের সাফল্য দেখে অনেকে এখন ফলটি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
সিদ্দিক বলেন, মাল্টা বারি-১ একটি উচ্চ ফলনশীল জাত। নিয়মিত ফলদানকারী ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ একটি ফল। পাকা ফল দেখতে আকর্ষণীয়। খেতেও সুস্বাদু। ফাল্গুনের মাঝামাঝি থেকে চৈত্রের মাঝামাঝিতে গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। কার্তিকে ফল আহরণের উপযোগী হয়ে ওঠে।
সিদ্দিক বলেন, বাগানের মাল্টা একদম বিষমুক্ত বলে স্থানীয়রা কিনতে আসেন। এ বাগান দেখে অনেক কৃষক ও উদ্যোক্তা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। মাল্টা চাষে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সম্ভাবনা ব্যাপক।
সরেজমিনে দেখা যায়, আবু বক্কর সিদ্দিক ভদ্রপাড়া গ্রামে লিজকৃত তিন একর জমিতে দেড় বছর আগে কৃষি বিভাগের সহায়তায় মাল্টা বারি-১ প্রজাতির ৩০০টি চারা রোপণ করেন। পাশাপাশি একই জায়গায় ৩৫০টি আমের চারা, ৫০০টি লেবুর চারা ও ১২০টি ভিয়েতনাম নারিকেলের চারা রোপণ করেন। সাথি ফসল হিসেবে শাকসবজির চাষও করেন তিনি।
গাছে মুকুল ধরার পর পোকা দমনের জন্য রেলোথ্রিন কীটনাশক ব্যবহার করেন। চলতি বছর তার সব গাছে মাল্টা ধরেছে। তবে এখনও খাওয়ার উপযোগী হয়নি। এ বছর মাল্টাসহ অন্য ফল বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকার বেশি আয়ের আশা করেছেন তিনি। মাল্টা চাষ ও বিক্রি করে সিদ্দিকের দিনগুলো রঙিন হয়েছে বলে জানালেন তিনি।
কিশোরগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক মো. আল-আমিন বলেন, স্বপ্ন যেন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। পরিশ্রম ও সাহসিকতায় মাল্টা চাষে সাফল্য অর্জন করেছেন সিদ্দিক। বারি-১ মাল্টা চাষে যে সাফল্য পাওয়া গেছে, তাতে এ অঞ্চলে এটি একটি সম্ভাবনাময় ফল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। মাল্টা চাষ কিশোরগঞ্জে বিপ্লব আনবে বলে আশা করছি। বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ শুরু হওয়ায় ভবিষ্যতে আমদানির প্রয়োজন পড়বে না। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে। পাশাপাশি কৃষক লাভবান হবেন। আমরা মাল্টা চাষে জেলার কৃষককে উদ্বুদ্ধ করছি এবং নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি।

সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ