ক্রীড়া প্রতিবেদক : বিশ্বকাপের পর থেকেই চোটের সঙ্গে লড়ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। শেষ পর্যন্ত ৫ মাসের লম্বা বিরতির পর বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) দিয়ে ঢাকা প্লাটুনের জার্সিতে মাঠে ফিরেছেন। কিন্তু গতকাল তার ফেরাতে রাঙাতে পারেনি রাজধানীর দলটি। আগে ব্যাট হাতে নেমে হতাশা উপহার দেন তামিম ইকবাল, শহিদ আফ্রিদি, থিসারা পেরেরা। পরে বল হাতেও বিবর্ণ ছিল মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের শিষ্যরা। সে সুযোগে হযরতউল্লাহ জাজাইয়ের হাফসেঞ্চুরি আর লিটন কুমার দাস ও শোয়েব মালিকের নৈপুণ্যে ৯ উইকেটের সহজ জয় তুলে নিয়েছে রাজশাহী রয়্যালস।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে গতকাল টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ঢাকার শুরুটা হয় হতাশার। পরে এনামুল হক বিজয় ও জাকির আলী চেষ্টা করেছিলেন দলের হাল ধরতে। কিন্তু রান আউট হয়ে জাকের ফিরতেই রাজধানীর দলটির ব্যাটিং লাইনআপ মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে পড়ে। শেষ দিকে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও ওয়াহাব রিয়ারেজ ছোট ঝড়ে ৯ উইকেটে ১৩৪ রানে থামে ঢাকা। জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই দারুণ খেলেন রাজশাহীর দুই ওপেনার লিটন-জাজাই। তাদের ব্যাটেই গতকাল জয়ের ভীত পেয়ে যায় দলটি। শেষ পর্যন্ত লিটন ফিরলেও ৮ বল আর ৯ উইকেট হাতে রেখে জাজাই-শোয়েব ম্যাচ জিতিয়েই ফেরেন।
বেশ কয়েক মাসের বিরতি দিয়ে গতকালই তামিম ব্যাট হাতে ফিরেছিলেন প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে। কিন্তু এ বাঁহাতি নিজের প্রত্যাবর্তনটা পারেননি রাঙাতে। মাত্র ৪ বল খেলে ১ চারে ৫ রান করে আবু জায়েদের বলে আফিফ হাতে ধরে পড়েন। এরপর লরি ইভান্সও সতীর্থের দেখানো পথে হাঁটেন। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে জাকের আলীকে নিয়ে দারুণ কিছুর আভাস দিয়েছিলেন এনামুল হক বিজয় (৩৮)। কিন্তু তৃতীয় উইকেটের এ জুটি ৭৩ রানে ভাঙে রান আউটে। ফিরে যান জাকের ১৯ বলে ২ চারে ২১ রান করে। এর আর ৫ রান যোগ হতেই দ্রুতই সাজঘরের পথ ধরেন থিসারা পেরেরা, এনামুল ও আফ্রিদি। বেশিক্ষণ টেকেননি আরিফুল হকও। যে কারণে ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে ঢাকা। সেখান থেকে দলকে উদ্ধারে জোর চেষ্টা করেন ওয়াহাব রিয়াজ ও মাশরাফি বিন মুর্তজা। শেষদিকে তারা লং হ্যান্ডেলে ব্যাট চালিয়ে স্কোর বোর্ডে মোটামুটি রান তুলেন। মাশরাফি ১০ বলে ২ ছয়ে করেন ১৮ রান। এদিকে ওয়াহাবের ব্যাট থেকে আসে ১২ বলে ২ ছয় ও ১ চারে ১৯ রান।
রাজশাহীর সফল বোলার আবু জায়েদ। ৪৩ রানে নেন ২টি উইকেট। এদিকে তাইজুল, ফরহাদ, অলক ও বোপারা নেন ১টি করে উইকেট।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই মারমুখী ছিলেন রাজশাহীর দুই ওপেনার লিটন ও জাজাই। সে ধারাবাহিকতায় তারা ৮.২ ওভারেই তুলে ফেলেন ৬২ রান। এর মধ্যে লিটনের অবদান ২৭ বলে ৪টি চার ও ২টি ছয়ে ৩৯। ঠিক সে সময়ই এ ডানহাতি মেহেদি হাসানের ঘূর্ণিতে আরিফুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। তবে রাজশাহীকে বিপদে পড়তে দেননি আফগানিস্তান ওপেনার জাজাই। পাকিস্তানি রিক্রুট শোয়েব মালিককে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৭৪ রানের জুটি গড়ে সহজেই দলকে জিতিয়ে ফেরেন। জাজাই ৪৭ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে অপরাজিত ছিলেন ৫৬ রানে। এদিকে মালিকের ৩৬ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ৩৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
বল হাতে এক উইকেট ও চমৎকার ফিল্ডিংয়ে দুটি রান আউট করায় ম্যাচসেরা হয়েছেন রবি বোপারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা প্লাটুন: ২০ ওভারে ১৩৪/৯ (তামিম ৫, এনামুল ৩৮, ইভান্স ১৩, জাকের ২১, থিসারা ১, আরিফুল ৫, আফ্রিদি ০, মেহেদি ৬, ওয়াহাব ১৯, মাশরাফি ১৮*, হাসান; রাসেল ৩-০-৮-০, আবু জায়েদ ৪-০-৪৩-২, তাইজুল ৩-০-২৩-১, ফরহাদ ২-০-১৪-১, অলক ৪-০-১৮-১, মিনহাজুল আফ্রিদি ১-০-১২-০, বোপারা ৩-০-১৫-১)।
রাজশাহী রয়্যালস: (জাজাই ৫৬*, লিটন ৩৯, মালিক ৩৬*; মাশরাফি ৩-০-১৮-০, হাসান ৪-০-৩৫-০, মেহেদি ৪-০-২৩-১, ওয়াহাব ৩.২-০-২৬-০, আফ্রিদি ৩-০-২৫-০, থিসারা ১-০-৬-০)।
ফল: রাজশাহী রয়্যালস ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: রবি বোপারা
মন্তব্য