মাশরাফি-চিরাগের নৈপুণ্যে রূপগঞ্জের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক: মনে হচ্ছিল অনায়াসেই বুঝি জিততে যাচ্ছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। কিন্তু কে জানতো শেষ বিকালে এমন উত্তাপ ছড়াবে। প্রতিটি ওভারে বল কমার সঙ্গে সঙ্গে শঙ্কা ভর করছিল লিজেন্ডস ভক্তদের মনে। কিন্তু না, সব শঙ্কা উড়িয়ে হেসে উঠল ফেভারিটরা। একেই বলে অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের মিশেল। আরেকটি ম্যাচে টিম ওয়ার্কে জয় তুলে নিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।

বুধবার ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের ম্যাচে তারা ২ উইকেটে হারিয়েছে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে। অবশ্য সহজ ম্যাচটা কঠিন করে জিতল তারা।

বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে খেলাঘরকে আগে ব্যাটিং করতে পাঠিয়ে ১৯৮ রানে অলআউট করে লিজেন্ডসরা। তারপর চিরাগ জানি-তানবির হায়দারের অর্ধশতকে দল ৪৯.৩ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে তুলে নেয় আরেকটি জয়। প্রিমিয়ার লিগে ৭ ম্যাচ খেলে ৫টিতেই জিতেছে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। আরেকটি ম্যাচে ব্যাটে বলে ছন্দ দেখালেন চিরাগ জানি। সঙ্গে মাশরাফি বিন মর্তুজাকেও দেখা গেল সেই চিরচেনা রূপে। বল হাতে প্রতিপক্ষকে শাসন করলেন এই অভিজ্ঞ তারকা। তার পথ ধরে দলও পেয়েছে আরেকটি জয়। তবে আলাদা করে তানবির হায়দারের কথাটাও বলতে হবে। লোয়ার অর্ডারে এসে নিজেকে উজাড় করে দিলেন। যে শঙ্কা ছিল তা উড়ল তার ব্যাটেই।

দিনের শুরুতে বল করতে নেমে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে কোণঠাসা করে ফেলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। অভিজ্ঞ এই পেসার ৮ ওভারে ১টি মেডেনসহ ৩৮ রানে নেন ৪ উইকেট। লিজেন্ডসদের মহাতারকা বুঝিয়ে দেন এখনো ফুরিয়ে যাননি তিনি।

এদিন মাশরাফি ছাড়াও বল হাতে সফল দলের ভারতীয় রিক্রুট পেসার চিরাগ জানি। ৫১ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। নাঈম ইসলাম, নাবিল সামাদ ও আল আমিন নিয়েছেন একটি করে উইকেট।

জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মাশরাফি এদিন ছিলেন দারুণ ছন্দে। হাসানুজ্জামানকে ফিরিয়ে শুরু, তারপর প্রথম স্পেলে বোলিং ফিগারটা ৬-০-২৮-১। এরপরের স্পেলে তুলেন আরও তিনটি উইকেট। এবারের লিগে এটাই তার সেরা বোলিং। চলতি লিগে আবাহনীর বিপক্ষে ৬৩ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন রূপগঞ্জের এই পেস বোলার। ৬ ম্যাচে সব মিলিয়ে ১২ উইকেট তুলে মাশরাফি আছেন আলোচনায়।

খেলাঘরের হয়ে ৫৯ রান করেন অমিত মজুমদার। হাসানুজ্জামান ২৯, নাদিফ চৌধুরী ২৫, মাসুম খান টুটুল করেন ২৪ রান।

মামুলি সংগ্রহের জবাবে নেমে শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের। দলের রান যখন ১৫ তখনই ফিরে যান ইরফান শুকুর ও সাব্বির হোসেন। তারপর পথ দেখালেন দুই ইনফর্ম ব্যাটসম্যান চিরাগ জানি ও নাঈম ইসলাম। এবারের প্রিমিয়ার লিগের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলছেন দু’জন। প্রায় প্রতি ম্যাচেই হয়ে উঠছেন লিজেন্ডসদের জয়ের নায়ক।

এদিনও কথা বলল চিরাগ ও নাঈমের ব্যাট। নাঈম অবশ্য এদিন অর্ধশতক পাননি, ফিরেন ২৪ রানে। তার আগেই আউট চিরাগ। তিনি গড়েন ৭৮ বলে ৭২ রানের দারুণ এক ইনিংস। আর জুটি ভাঙে দলীয় ১০৫ রানে। এরপর চটজলদি সাব্বির রহমানকেও হারায় সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। তিনি ফেরেন ২ রানে।

তারপরই তানবির হায়দার ও রকিবুল হাসান দক্ষতার সঙ্গে সামাল দেন পরিস্থিতি। দলকে বিপদমুক্ত করে রকিবুল ফেরেন ১৪ রানে। পরে তানবিরের ব্যাটেই জয়ের বন্দরে নোঙর করে রূপগঞ্জ। তার আগে মাশরাফি ১৭ বলে ১২ রান করে ধরেন সাজঘরে পথ। তানবির দলকে জিতিয়ে ৬১ বলে ৫১ রানে অপরাজিত এবং নাবিল সামাদ ৫ বলে করেন অপরাজিত ৪ রান। এই জয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ আরেকটু এগিয়ে গেল। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

খেলাঘর : ৪৮ ওভারে ১৯৮/১০ (অমিত ৫৯, হাসানুজ্জামান ২৯, নাদিফ ২৫; নাবিল ১/২৯, আল আমিন ১/৩৩, মাশরাফি ৪/৩৮, নাঈম ১/২৫, চিরাগ জানি ৩/৫১)

রূপগঞ্জ : ৪৯.৩ ওভারে ১৯৯/৮ (চিরাগ ৭২, নাঈম ২৪, রকিবুল ১৪, তানবির ৫১, মাশরাফি ১২; টুটুল ২/২৬  ইমন ৩/২১)

ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ২ উইকেটে জয়ী

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০