ক্রীড়া প্রতিবেদক: তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমানবিহীন একটা দল। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে তার ছিটেফোঁটাও বুঝতে দিলো না বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। টাইগারদের নিয়মিত একাদশের তিন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছাড়াই শ্রীলঙ্কা সিরিজে ওয়ানডেতে মাঠে নামার আগে দারুণ লড়াই করলো বাংলাদেশ। একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কা বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের কাছে মাশরাফি বিন মুর্তজার ৩৫ বলে ৫৮ রানের ঝড় শেষে সফরকারীরা হেরেছে মাত্র ২ রানে। তাও আবারও প্রতিপক্ষের দেওয়া ৩৫৪ রানের বিশাল স্কোর তাড়া করে।
কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে গতকাল বিশাল স্কোর তাড়া করতে গিয়ে দারুণ ব্যাটিং করে বাংলাদেশ। একমাত্র ইমরুল কায়েস ছাড়া সবার ব্যাটেই এসেছে রান। বিশেষ করে অষ্টম উইকেট জুটিতে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও দ্বিতীয় টেস্টে দল থেকে বাদপড়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এ দুজনে গড়ে তোলেন ৫৮ বলে ১০১ রানের জুটি। মাশরাফি করেন ৩৫ বলে ৫৮ রান। তার ইনিংসটিতে ছিল ৪টি চার ও ৪টি বিশাল ছয়ের মার। কিন্তু দলকে জয়ের কাছে পৌঁছে দেওয়ার একেবারে শেষ মুহূর্তে আউট হয়ে টাইগার রঙিন পোশাকের অধিনায়ক ফিরে যান সাজঘরে। এরপর শেষ বলে ৪ রানের সমীকরণ শেষ পর্যন্ত মিলিয়ে দিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ৭১ রান করে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। এছাড়া সাব্বির রহমান ৭২ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৫৩, সৌম্য সরকার করেন ৪৭ রান। মুশফিকুর রহিম আউট হন ২০ রানে।
৩৫৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই ইমরুল কায়েসকে হারায় বাংলাদেশ। এরপর সাব্বির রহমানকে নিয়ে দারুণ খেলতে থাকেন সৌম্য সরকার। ১০৩ বলে এ জুটি দলীয় স্কোর বোর্ডে যোগ করেন ১১৭ রান। মূলত বড় স্কোর তাড়া করতে তারাই পথ দেখিয়েছিল সফরকারীদের। কিন্তু ১১৬ থেকে ১২৪ রানের মধ্যে সৌম্য ও সাব্বির ফিরে যান সাজঘরে। এরপর মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে আরও ২৮ রান যোগ করেন মুশফিকুর রহিম। ব্যক্তিগত ২০ রানে মুশফিক ফেরেন। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১৫২। মোসাদ্দেক টেনে নিচ্ছিলেন ৫০ বলে ৫৩ করে। কিন্তু তিনিও আউট হন।
মোসাদ্দেক ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন শুভাগত হোম চৌধুরী ও নবাগত সানজামুল ইসলাম। ঠিক তখনই বিধ্বংসী রূপে দেখা মেলে মাশরাফি বিন মুর্তজার। অন্যপ্রান্তে অধিনায়ককে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২৮ বলে ৪টি চার-ছয়ে মাশরাফি পূর্ণ করেন হাফ সেঞ্চুরি। ঠিক তখন জয় থেকে ৯ বলে মাত্র ১৩ রান দূরে বাংলাদেশ। ওই সময় আউট হন ম্যাশ। শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ-সাইফুদ্দিন নিতে পারেন ১১ রান। যে কারণে কাছে গিয়ে জয় পাওয়া হয়নি সফরকারীদের।
৬১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে আকিল ধনঞ্জয়া বোর্ড সভাপতি একাদশের সেরা বোলার। চতুরঙ্গা ডি সিলভা ২ উইকেট নেন ৫৩ রানে।
এর আগে টস জিতে বোলিংয়ে বিবর্ণ ছিল বাংলাদেশ। শুরু থেকে শ্রীলঙ্কা বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের ব্যাটসম্যানরা ঝড়ের গতিতে রান তুলতে থাকেন। দলটির হয়ে রিবাক্কোডি ও কুশল পেরেরা দুজনেই করেন সর্বোচ্চ ৬৭ রান করে। এছাড়া ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ৫২ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে সানজামুল, আবুল হাসান, মাশরাফি ও তাসকিন নেন ১টি করে উইকেট।
আগামী শনিবার ডাম্বুলায় হবে তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশ: ৫০ ওভারে ৩৫৪/৭ (বিরাক্কোডি ৬৭, কুশল পেরেরা ৬৭, ধনঞ্জয়া ৫২; সানজামুল ১/২৭, আবুল হাসান ১/৩৫, মাশরাফি ১/৬৬, তাসকিন ১/৫১)
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩৫২/৮ (ইমরুল ০, সৌম্য ৪৭, সাব্বির ৭২, মুশফিকুর ২০, মোসাদ্দেক ৫৩, মাহমুদউল্লাহ ৭১*, শুভাগত ২, সানজামুল ৫, মাশরাফি ৫৮*; চতুরঙ্গা ২/৫৩, আকিলা ধনঞ্জয়া ৩/৬১, মদুশঙ্কা ১/৩৯)।
ফল: শ্রীলঙ্কা একাদশ ২ রানে জয়ী
Add Comment