মাসে ৩০ হাজারের বেশি অভিবাসী নেয়ার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: মানবিক সহায়তা কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় প্রতি মাসে কিউবা, নিকারাগুয়া, হাইতি ও ভেনেজুয়েলা থেকে ৩০ হাজারের বেশি অভিবাসী নেয়ার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের নেয়া এ সিদ্ধান্ত শিগগির বাস্তবায়ন করা হবে। খবর: রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অভিবাসী গ্রহণের এ কর্মসূচিতে প্রাথমিকভাবে গুরুত্ব দেয়া হবে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আশ্রয় নেয়া হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে। এ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি বড় অংশ হাইতি থেকে এসেছে। তাদের সঙ্গে কিউবা, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলা থেকে আসা লোকজনও রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে ইচ্ছুক ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের জন্য একটি নতুন নীতি গ্রহণ করেছিল ওয়াশিংটন। সেই নীতিতে উল্লেখ ছিলÍ ভেনেজুয়েলার যেসব নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে স্পন্সর যোগাড় করতে পারবেন, তারা দেশটিতে প্রবেশ ও স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন করতে পারবেন।

উত্তর আমেরিকার দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার আইন অনুযায়ী, নাগরিকত্ব পাওয়া যেকোনো নাগরিক তার নিজ দায়িত্বে পরিবারের নিকট সদস্যদের সেখানে নিতে পারেন। এ ব্যাপারটি ‘স্পনসরশিপ’ নামে পরিচিত এবং যে নাগরিক তার পরিবারের সদস্যদের আনবেনÑতাদের বলা হয় স্পনসর। তবে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে ইচ্ছুক ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের স্পন্সরের ক্ষেত্রে পরিবারের নিকট সদস্য সংক্রান্ত কোনো বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি অক্টোরের নীতিতে।

ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সামনের সপ্তাহে ‘নর্থ আমেরিকান লিডার্স সামিট’ সম্মেলনে যোগ দিতে মেক্সিকোয় যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সম্মেলনে যোগ দেবেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তের পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের পরিকল্পনা রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের।

গতকাল বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন জো বাইডেন নিজেও। সাংবাদিকদের উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি সত্যিই জানতে চাই সেখানে (যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত) আসলে কী চলছে এবং প্রকৃত পরিস্থিতি আসলে কেমন।

দুই বছর হয়ে গেল বাইডেন ক্ষমতায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি মেক্সিকোর সীমান্তে যাননি। এখানে হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী সীমান্তের ধারে অপেক্ষারত। যত দিন যাচ্ছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে কেন বাইডেন সীমান্তে যাচ্ছেন না, তা নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যেও সমালোচনা শুরু হয়েছিল। বাইডেনের সফর তারই জবাব বলে মনে করা হচ্ছে।

অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্পের নীতি কঠোর ও স্পষ্ট ছিল। করোনা মহামারি শুরুর দিকে ট্রাম্প শতাব্দীপ্রাচীন আইন টাইটেল ৪২ জারি করেছিলেন। যে আইনের সাহায্যে যেকোনো সময় যেকোনো অভিবাসীকে দেশ থেকে বের করে দেয়া যায়। অভিবাবাসীপ্রত্যাশীদের জন্য সীমান্ত সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া যায়। কভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি ওই আইন বাতিল করতে দেয়নি। সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর আবেদনের ভিত্তিতে তা বহাল রাখা হয়েছে, যা নিয়ে দেশের ভেতর বিতর্ক যথেষ্ট দানা বেঁধেছে। এ পরিস্থিতিতে বাইডেন সীমান্ত সফরে যাচ্ছেন।

আমেরিকার সঙ্গে তিন হাজার ৫৭ কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে মেক্সিকোর। এ সীমান্ত ধরে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা আমেরিকায় প্রবেশ করতে চায়।

প্রসঙ্গত গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের সরকার মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসী ঠেকানোর লক্ষ্যে তৈরি একটি অস্থায়ী দেয়াল সরিয়ে ফেলতে রাজি হয়েছে। রাজ্যের রিপাবলিকান গভর্নর, যার নির্দেশে দেয়ালটি নির্মাণ করা হয়েছিল, তিনি যুক্তি দেখিয়েছিলেন এ দেয়াল অভিবাসী ঢলকে আমেরিকায় ঢুকতে বাধা দেবে। তবে যারা এ দেয়ালের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করেছেন তারা এ যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ৯ শতাধিক শিপিং কনটেইনার দিয়ে তৈরি এ দেয়াল নির্মাণ করতে সরকারের অন্তত আট কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০