Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 2:13 am

মা-বাবার দেখভালে অবহেলায় বেতন কাটা হবে আসামের চাকরিজীবীদের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারতের আসামের সরকারি চাকরিজীবীদের ওপর নির্ভরশীল বয়স্ক মা-বাবা এবং প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের দেখভালে অবহেলা করলে মাস শেষে বেতনের ১০ থেকে ১৩ শতাংশ কেটে নেওয়া হবে। গতকাল শুক্রবার এ-সংক্রান্ত এক বিল পাস করে রাজ্যের বিধানসভা। এ অর্থ ওই কর্মীর মা-বাবা বা প্রতিবন্ধী ভাইবোনকে দেওয়া হবে। আগামী ২ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হবে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।
জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে অনেক মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই নিতে হয়। দায়িত্ব এড়িয়ে যান তাদের সন্তানেরা। এ বিষয় মাথায় রেখে বিজেপি নিয়ন্ত্রিত আসাম সরকার গত সোমবার দ্য আসামস এমপ্লয়িজ প্যারেন্টস রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড নরমস ফর অ্যাকাউন্টিবিলিটি অ্যান্ড মনিটরিং বিল ২০১৭ পাস করে। এটিকে সংক্ষেপে প্রণাম বিলও বলা হয়।
গত শুক্রবার আসামের স্বাস্থ্য ও অর্থমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, যে মা-বাবার আয়ের কোনো উৎস নেই, যারা সন্তানের ওপর নির্ভরশীল, তাদের ভরণপোষণ নিশ্চিত করতেই এ পদক্ষেপ। সরকারি কর্মীদের অবশ্যই তাদের ওপর নির্ভরশীল শারীরিক প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের দেখভাল করতে হবে।
শর্মা বলেন, কোনো সরকারি চাকরিজীবী যদি তার ওপর নির্ভরশীল বাবা-মায়ের ঠিকঠাক দেখভাল না করেন, তাহলে তার বেতনের ১০ শতাংশ কেটে নেওয়া হবে। এ বাবা-মায়ের যদি একাধিক সন্তান সরকারি চাকরিজীবী হয়ে থাকেন, তাহলে ওই অর্থ সবার মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে। শারীরিক প্রতিবন্ধী ভাইবোনের ক্ষেত্রেও যদি একই অভিযোগ পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে ওই কর্মীর বেতনের ১৫ শতাংশ কাটা হবে।
কর্তৃপক্ষ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ওই চাকরিজীবী সন্তানকে বিষয়টি জানাবেন। এতে তিনি বা ওই বাবা-মা সন্তুষ্ট না হলে সরকারের মনোনীত কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করতে পারবেন। এতেও সন্তুষ্ট না হলে প্রণাম কমিশনের কাছে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এ অর্থ পেতে সেসব বাবা-মাকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে। তাদের যে আয়ের কোনো উৎস নেই, সে তথ্য-প্রমাণসহ সাহায্যের আবেদনটি করতে হবে। কর্তৃপক্ষ যদি দেখে, সে অভিভাবকের সাহায্য চাওয়ার কোনো ভিত্তি নেই, তাহলে আবেদনটি বাতিলও হতে পারে।
রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘প্রণাম অসমিয়া সংস্কৃতির প্রতি আঘাত। কর্মচারীদের ব্যক্তিগত জীবনেও হস্তক্ষেপের শামিল।’ প্রবীণ এ কংগ্রেস নেতার মতে, ‘অসমীয়া সমাজ শুধু মা-বাবার দেখভালের শিক্ষা দেয় না, চাচা-চাচির শুশ্রুষা করার দায়ভারও পড়ে ছেলেমেয়েদের ওপর। প্রণাম সে প্রথার অবলুপ্তি ঘটাতে পারে।’