শোবিজ ডেস্ক: শৈশবে দুর্গোৎসবে কৃষ্ণ কিংবা প্রজাপতি চরিত্রে অভিনয় ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মুখিয়ে থাকতেন বলিউড অভিনেত্রী রানি মুখার্জি। নব্বইয়ের দশকে তারকা হয়ে যাওয়ার পর তা স্বাভাবিকভাবেই কমতে শুরু করে। তবে দুর্গাপূজার স্মৃতি সব সময়ই মনে পড়ে তার। এ নিয়ে এখনও সমান উচ্ছ¡াস কাজ করে এই বাঙালি মেয়ের মধ্যে। কারণ মুখার্জি পরিবার প্রতি বছরই মুম্বাইয়ে এ উৎসব উদযাপন করে।
এবারের দুর্গাপূজার প্রাক্কালে ভারতের সংবাদ সংস্থা হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন রানি। শৈশবের দুর্গাপূজার স্মৃতি হাতড়ে তিনি বলেন, ‘তখন আমার বয়স তিন বছর। আমাদের পরিবারের সব শিশু-কিশোর মঞ্চে পারফর্ম করতো। আমি একবার প্রজাপতি সেজে অভিনয় করেছি। কৃষ্ণও হয়েছিলাম। এছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাটক ও অন্যান্য সৃষ্টিকর্ম অবলম্বনে সাজানো নাচের অনুষ্ঠানে অংশ নিতাম।’
দুর্গাপূজায় সাংস্কৃতিক প্রভাব প্রসঙ্গে রানি বলেন, ‘আপনারা জানেন বাঙালিরা বিশেষ করে প্রবাসীরা (পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যারা থাকেন) শিশুদের সাংস্কৃতিক আবহে রাখার ব্যাপারে বেশ সচেতন। শিশুরা কবিগুরুর চর্চা করবে এটাই সবার চাওয়া। দুর্গাপূজার মাধ্যমে আমরা রবীন্দ্রনাথের গান ও অন্যান্য সৃষ্টিকর্ম সম্পর্কে জেনেছি।’
রানি জানান, তার মা-বাবার প্রথম দেখা হয়েছিল দুর্গোৎসব চলাকালে। একজন গায়িকা মঞ্চে না আসায় রানির মা গান গেয়েছিলেন। তার গায়কীতে মুগ্ধ হন রানির বাবা। এভাবেই তাদের প্রেম ও বিয়ে।
তারকা হয়ে যাওয়ার পর থেকে দুর্গোৎসবের আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পান না রানি। সব যেন কেমন করে বদলে গেছে। যেখানেই যান, ভিড় লেগে যায়! তার ভাষ্য, ‘মা দুর্গার আশীর্বাদ না নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। এখন তো পূজামণ্ডপে দুই মিনিটও থাকার সুযোগ হয় না। পূজা করতে বসলে আমার পিছু নেয় ক্যামেরা। তবুও অন্তত একটা দিন মণ্ডপে গিয়ে ভোগ পরিবেশন করার ইচ্ছা
জাগে। এটা মন থেকে চাই। ছোটবেলা থেকেই এটাতে অভ্যস্ত আমি।’
আগামী বছর ‘হিচকি’ নামের একটি ছবির মাধ্যমে বলিউডে প্রত্যাবর্তন করছেন রানি। তাকে সবশেষ বড় পর্দায় দেখা গেছে ‘মারদানি’তে। দুটোই প্রযোজনা করেছেন তার স্বামী যশরাজ ফিল্মসের স্বত্বাধিকারী আদিত্য চোপড়া।
এদিকে অভিনয় জীবনের ২০ বছর পূর্ণ করেছেন রানি। বলিউডে প্রথম তিন ছবিতেই নায়ক হিসেবে শাহরুখ খান, সালমান খান ও আমির খানকে পেয়েছেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘সত্যি বলতে অভিনেত্রী হতে চাইনি। সেই আমি এতটা বছর অতিক্রম করেছি। ভাবুন তাহলে কী শিক্ষণীয় পথচলার মধ্য দিয়ে এসেছি। প্রতিটি ছবিতে প্রত্যেক পরিচালক ও সহশিল্পীর কাছ থেকে নতুন কিছু না কিছু শিখেছি। হোক সেই ছবি হিট কিংবা ফ্লপ।’
রানির ক্যারিয়ারের অন্যতম হিট ছবি ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ মুক্তির ২০ বছর পূর্ণ হবে ২০১৮ সালে। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের তালিকায় আরও আছে ‘গুলাম’, ‘ব্লাক’, ‘হাম তুম’, ‘সাথিয়া’, ‘যুবা’, ‘তালাশ’, ‘কাহি পেয়ার না হো জায়ে’, ‘চলতে চলতে’,
‘কাভি আলবিদা না কেহনা’ প্রভৃতি। তবে রানির জীবনের প্রথম ছবি বাংলা ভাষায়, কলকাতার ‘বিয়ের ফুল’।