মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকৃত অর্থ স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে হবে

বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ডই খারাপ অবস্থানে রয়েছে। এখানে মূল সমস্যাটি বের করতে হবে। মিউচুয়াল ফান্ডে যারা বিনিয়োগ করছেন তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফান্ড ম্যানেজাররা কোন খাতে ব্যবহার করছেন সেটি বের করা জরুরি। এ বিষয়ে বিএসইসির কঠোর নজরদারি করা উচিত। কারণ এখানে হাজার হাজার বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ রয়েছে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের হেড অব ব্রাঞ্চ এসএম নাসির উদ্দিন এবং দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সিনিয়র নিউজ কনসালটেন্ট রায়হান
এম চৌধুরী।
এসএম নাসির উদ্দিন বলেন, পুঁজিবাজারের সূচক প্রতিনিয়ত কমছে। আসলে বিশ্বের পুঁজিবাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের বাজার এগোচ্ছে না। গত কয়েক বছরে বাজারের অনেক সংস্কার ও পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের পুঁজিবাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেভাবে সংস্কার ও উন্নয়ন হওয়ার কথা সেভাবে হয়নি। অন্যান্য পুঁজিবাজার যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সে তুলনায় দেশের পুঁজিবাজার অনেকটা ধীরগতিতে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের পুঁজিবাজারের মোট টার্নওভারের ১৩ শতাংশ মিউচুয়াল ফান্ডে, ১০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগকারীর, বিমা খাতে ৯ থেকে ১০ শতাংশ বিনিয়োগ রয়েছে। ভারতের মোট অর্থনীতিতে বিমা খাতের প্রায় চার শতাংশ অবদান রয়েছে। এ কারণে ভারতের পুঁজিবাজার স্থিতিশীল এবং উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর ভারতের অর্থনীতির উন্নয়নে সে দেশের পুঁজিবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু দেশের পুঁজিবাজারে মিউচুয়াল ফান্ড ও বিমা খাতে তেমন উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে না। তাই মিউচুয়াল ফান্ড ও বিমা খাত কীভাবে ঢেলে সাজানো যায় সেদিকে নজর দিতে হবে।
এক বিনিয়োগকারী বলেন, ২০১০ সালে ৬৬ লাখ টাকা দিয়ে পুঁজিবাজারে ব্যবসা শুরু করি। এখন ৬৬ লাখ টাকা ছয় লাখ টাকায় নেমে এসেছে। দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু পুঁজিবাজার সেভাবে এগোচ্ছে না। তাহলে পুঁজিবাজার আর কবে ভালো হবে। আমরা আশা করি কোম্পানিগুলো নগদ লভ্যাংশ দেবে কিন্তু নগদ লভ্যাংশ না দিয়ে বেশিরভাগ কোম্পানি বোনাস লভ্যাংশ দিচ্ছে।
রায়হান এম চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারে এখনও কাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। আবার যারা বাজারসংশ্লিষ্ট অর্থাৎ পুঁজিবাজার নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেন, তাদের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীর স্বার্থে বিশ্বের পুঁজিবাজারে কী পরিবর্তন হচ্ছে, সেটির সঙ্গে সমন্বয় রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ায় সক্রিয় থাকতে হবে। এছাড়া বাজারের গভীরতা বৃদ্ধি, স্থিতিশীল এবং উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। আবার বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো তেমন ভালো অবস্থানে নেই। বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ডই খারাপ অবস্থানে। এখানে মূল সমস্যাটি বের করতে হবে। মিউচুয়াল ফান্ডে যারা বিনিয়োগ করছেন তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফান্ড ম্যানেজাররা কোন খাতে ব্যবহার করছেন সেটি বের করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে বিএসইসির কঠোর নজরদারি করা উচিত। তবে বিএসইসি এ বিষয়ে বেশকিছু নীতিমালা প্রণয়ন করেছে কিন্তু সেটি কতটুকু অনুসরণ করা হয় সেটিই প্রশ্ন। অর্থাৎ মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকৃত অর্থ সঠিকভাবে বা স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে হবে। কারণ মিউচুয়াল ফান্ডে হাজার হাজার বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত দুবছরে প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজার সংক্রান্ত চারটি সভায় উপস্থিত ছিলেন। এতে বোঝা যাচ্ছে, তিনি পুঁজিবাজার নিয়ে ভাবছেন। আগে এ রকম দেখা যেত না। তবে এখানে বিনিয়োগকারীদেরও দায়িত্ব রয়েছে। কারণ পুঁজিবাজার একটি ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা। এখানে ভেবেচিন্তে বিনিয়োগ করতে হয়। বাজার সম্পর্কে ভালো করে না বুঝে হঠাৎ বিশাল অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করলাম। এ টাকার লাভ লোকসান কিন্তু নিজেকেই বহন করতে হবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০