Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 5:36 pm

মিন্টুর নেতৃত্বে ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংকটে থাকা বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয়ার সাড়ে তিন মাসের মাথায় আবারও পুনর্গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চেয়ারম্যান হচ্ছেন ব্যাংকটির অন্যতম উদ্যোক্তা পরিচালক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাকে জোর করে ব্যাংক থেকে বের করে দখল নেয় শিকদার পরিবার। কিছুদিন আগে শিকদার পরিবারকে হটিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ তুলে দেয় এস আলম গ্রুপের হাতে।

বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল মঙ্গলবার এক চিঠিতে এই সিদ্ধান্ত ন্যাশনাল ব্যাংককে জানিয়েছে। ১০ সদস্যের পর্ষদ পুনর্গঠন করে সাত সদস্যের করা হয়েছে। আগের পর্ষদের একজনকে রেখে বাকিদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। উদ্যোক্তা পরিচালক ও চট্টগ্রামের কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান চেয়ারম্যানের পাশাপাশি পরিচালক পদ থেকে বাদ পড়েছেনে। আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সুশাসন নিশ্চিত করতে পর্ষদ ভেঙে দেয়ার কথা বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশে বলা হয়েছে।

ন্যাশনাল ব্যাংকের মালিকানায় থাকা সিকদার গ্রুপের বিরুদ্ধেই এত দিন অনিয়মের নানা অভিযোগ ছিল। শেষ পর্যন্ত সিকদার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার পর গত ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সুপারিশে ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে ওই সময় নতুন পর্ষদও গঠন করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে সিকদার পরিবারের অন্য সদস্যদের সরিয়ে দিয়ে শুধু পারভীন হক সিকদারকে রাখা হয়। তবে এই পর্ষদও বেশিদিন টিকেনি। মাত্র সাড়ে চার মাসের মাথায় গত মে মাসে আবারও পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময়ে এস আলমের প্রতিনিধি বসানো হয় ব্যাংকটিতে। তবে সরকার পতনের পর সাড়ে তিন মাসের মাথায় আবারও ব্যাংকটির পরিচালন পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। অর্থাৎ আট মাসের মাথায় তিনবার ভাঙা হলো ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ।

ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পর্ষদে তিনজন পরিচালকের পাশাপাশি চারজন স্বতন্ত্র পরিচালক করা হয়েছে। পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদে উদ্যোক্তাদের মধ্যে মোয়াজ্জেম হোসেন ও জাকারিয়া তাহের পরিচালক হয়েছেন। আর স্বতন্ত্র পরিচালক করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. জুলকার নায়েন, সীমান্ত ব্যাংকের সাবেক এমডি মুখলেসুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেলিতা মেহজাবিন ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট মো. আব্দুস সাত্তার সরকার।

ব্যাংকিং খাতের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ন্যাশনাল ব্যাংকের আগের পরিচালকদের অনেকেই চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নামে-বেনামে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ছিলেন। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যাংকটিকে এস আলম গ্রুপের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকসহ ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক বর্তমানে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।