শেয়ার বিজ ডেস্ক:ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় একটি সাহায্যকারী সংস্থা ও একজন রোহিঙ্গা অধিকারকর্মীর বরাত দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
পার্টনার্স রিলিফ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নামের সংস্থা বলেছে, রাখাইনে কয়েকশ মানুষ নিহত হওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ সাহায্যকারী সংস্থাটি রাখাইন রাজ্যে নিজেদের কার্যক্রম চালায়। তারা জানিয়েছে, রাজধানী সিট্যুয়ের কাছে যেসব রোহিঙ্গা বসবাস করেন তারা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ে তাদের আশ্রয় ক্যাম্পগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ঘূর্ণিঝড়ের পরই কয়েকশ মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
অপরদিকে রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী অং কো মো টুইটে বলেছেন, শুধু রাজধানী সিট্যুয়েতেই ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী ছাড়াও তিনি ইউনিটি সরকারের মানবাধিকার মন্ত্রণালয়ের পরামর্শকের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি ধ্বংসপ্রাপ্ত কিছু ভবনের ভিডিও প্রকাশ করেন। তবে ভিডিওতে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
মোখার আঘাতে রাখাইন কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটি স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি থেকে কিছুটা আন্দাজ করা যাচ্ছে।
প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে গত রোববার বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন ও মিয়ানমারের রাখাইনে আঘাত হানে মোখা।
২৫০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন ঝড়ো বাতাস নিয়ে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পরের দিন, সোমবার রাতে দেশটির সামরিক জান্তা রাখাইনকে ‘দুর্যোগপূর্ণ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে রাখাইনে মোবাইল টাওয়ার, গাছপালা, ঘরবাড়ির ছাদ ও টিনের চাল উড়ে যায়। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে রাখাইনের অনেক নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাকারী সংস্থা কর্ডিনেশন অব হিউমেনিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ইউএনওসিএইচএ) জানিয়েছে, রাখাইনের রাজধানী সিট্যুয়ে এবং এর আশপাশের অঞ্চলগুলো ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোমবার এ ব্যাপারে এক বিবৃতিতে ইউএসওসিএইচএ বলেছে, প্রাথমিক তথ্য দেখাচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিশাল। এছাড়া গৃহযুদ্ধের কারণে যেসব মানুষ বাস্তুহারা হয়েছেন, তাদের আরও বেশি সাহায্যের প্রয়োজন হবে।
ঘূর্ণিঝড়টি যে পথে গেছে, সে পথে প্রায় দুই লাখ মানুষের বসবাস ছিল, যার মধ্যে আছেন রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষও।