মিয়ানমারের সেনাদের শিগগিরই ফেরত পাঠানো হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুদ্ধের মধ্যে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসা মিয়ানমার সেনাদের দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন তিনি।

এর আগে ভোরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিন সদস্য ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন বলে খবর পাওয়ার কথা জানান বান্দরবানের জেলা প্রশাসক।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে সেনাবাহিনীর তিন কর্মকর্তা পালিয়ে এসেছেন। তারা আমাদের বিজিবির হেফাজতে আছেন।

‘বিজেপির ১৭৯ জন যারা পালিয়ে এসেছেন, তাদের নৌপথে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মিয়ানমার এরই মধ্যে প্রস্তাব করেছে। আমরা আশা করি খুব সহসাই এই তিনজনসহ তাদের নৌপথে ফেরত পাঠাতে পারব।’

এর আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাখাইন রাজ্যে যুদ্ধের মধ্যে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জনকে দেশটিতে ফেরত পাঠিয়েছিল সরকার।

তাদের মধ্যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ৩০২ জন, তাদের পরিবারের চার সদস্য, দুই সেনাসদস্য, ১৮ ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চার বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।

এরপর ১১ মার্চ নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসেছিলেন মিয়ানমারের ১৭৯ বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্য। তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে বলে আশা করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের কনসাল জেনারেল সেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছে। আমরা আশা করব নিউইয়র্ক প্রশাসন এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করবে। যদি কারও ওভার রিঅ্যাকশন পাওয়া যায় এবং এমন কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

‘ওই পরিবারটির বক্তব্য হচ্ছে, পুলিশ যে পরিস্থিতিতে গুলি করেছে, সেটার প্রয়োজন ছিল না। পুলিশের বক্তব্য ভিন্ন। সেই তরুণকে ছয়টি গুলি করা হয়েছে, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

গত বুধবার নিউইয়র্কে নিজের বাসায় পুলিশের গুলিতে মারা যান ১৯ বছর বয়সী উইন রোজারি। ওই তরুণের বাড়ি গাজীপুরে। পরিবারের সঙ্গে ওজোনপার্কে ১০৩ স্ট্রিট ও ১০১ এভিনিউয়ে থাকতেন তিনি।

নিউইয়র্ক পুলিশের ভাষ্য, হটলাইন ৯১১ নম্বরে কল পেয়ে ওই বাসার পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিল পুলিশ। সেখানে গিয়ে তারা দেখেন উইন সহিংস হয়ে উঠেছেন। উইনকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে তিনি একটি ড্রয়ার থেকে কাঁচি বের করে পুলিশের দিকে ধেয়ে যান।

‘উইনকে শান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন কর্তব্যরত দুই পুলিশ কর্মকর্তা। এতে তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে কাঁচি হাতে পুলিশের ওপর আক্রমণের চেষ্টা করেন। পুলিশ তখন ‘বাধ্য হয়ে’ তাকে গুলি করে,’ বলেছিলেন পুলিশের চিফ অব পেট্রোল জন চেল। আহত অবস্থায় উইনকে অ্যাম্বুলেন্সে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে নিহত উইনের মা ইভা কস্টা (৪৯) দাবি করেছেন, তার ছেলে পুলিশের দিকে কাঁচি হাতে ধাওয়া করেনি।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠি এবং প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ফিরতি চিঠির মাধ্যমে আমাদের ঘনিষ্ঠতা, মিত্রতা ও সম্পর্ক আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি।”

সোমালি জলদস্যুদের জিম্মি দশা থেকে নাবিক ও জাহাজ শিগগিরই মুক্ত করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘সোমালিয়ার জলদস্যুদের সঙ্গে এরই মধ্যে যোগাযোগ হয়েছে, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। আমাদের নাবিকরা সবাই ভালো আছে, তারা কেবিনে আছে। তাদের খাবার-দাবারের কোনো সমস্যা নেই। নাবিকদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ এ পর্যন্ত করা হয়নি।”

গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতের একটি বন্দরে কয়লা নিয়ে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরের কাছে এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালি জলদস্যুরা। জিম্মি হওয়া জাহাজের ২৩ নাবিক ও ক্রু সবাই বাংলাদেশি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০