মিরাজ ম্যাজিকে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের দাপট

Bangladesh's players celebrates after the dismissal of West Indies' Jermaine Blackwood(R) during the third day of the first cricket Test match between Bangladesh and West Indies at the Zohur Ahmed Chowdhury Stadium in Chittagong on February 5, 2021. (Photo by Munir Uz zaman / AFP)

ক্রীড়া ডেস্ক: আগের দিন ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছিলেন। সে ধারাবাহিকতা ধরে রেখে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখাও পেয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনে সেই তিনিই আবার দেখালেন বল হাতে ম্যাজিক। বলতে গেলে তার ঘূর্ণিতেই দিশেহারা হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যে কারণে সফরকারীদের ২৫৯ রানে গুটিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ পেয়ে যায় ১৭১ রানের বড় লিড। দ্বিতীয় ইনিংসে দিন শেষে ৩ উইকেটে টাইগাররা করেছে ৩ উইকেটে ৪৭ রান। তাই লিড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৮ রানে। সব মিলিয়ে চলতি টেস্টে দাপট দেখাচ্ছে স্বাগতিকরা। অপরাজিত রয়েছেন মুমিনুল ৩১ ও মুশফিক ১০ রানে।  

চট্টগ্রাম টেস্টে শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ শিবিরে লাগে কড় ধাক্কা। বাম উরুতে নতুন করে চোট পাওয়ায় মাঠে নামতে পারেননি সাকিব আল হাসান। পরে জানা যায়, চলতি টেস্টে আর বলই করতে পারবেন না তিনি। প্রয়োজন হলে হয়তো ব্যাট হাতে নিতেও পারেন। তবে মাঠে ক্রিকেটে তার না থাকা তেমন প্রভাব পড়েনি স্বাগতিক শিবিরে। দিনের প্রথম বলেই যে বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন তাইজুল ইসলাম।  বোনারকে (১৭) স্লিপে ক্যাচ বানান বাঁহাতি এ স্পিনার । এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের সেভাবে স্বস্তি দেননি তিন স্পিনার তাইজুল, মিরাজ ও নাঈম। তবে প্রথম ৭ ওভারে ৭টি চার মেরে চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন সফরকারীদের কাইল মায়ার্স ও ক্রেগ ব্রাফেট জুটি। শেষ পর্যন্তকে ব্রাফেটকে (৭৬) দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন ৫৫ রানের জুটি ভাঙেন নাঈম।

এদিকে মিরাজ এসে নিজের প্রথম ওভারেই এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন মায়ার্সকে (৪০)। এরপর অবশ্য টাইগারদের বেশ পরীক্ষায় ফেলেছিলেন জার্মেইন ব্ল্যাকউড ও জশুয়া ডি সিলভা। তারা ষষ্ঠ উইকেটে ৯৯ রানের জুটি গড়ে দেন চোখ রাঙানি। শেষ পর্যন্ত জশুয়াকে (৪২) উইকেটের পেছনে ক্যাচে ফিরিয়ে টাইগার শিবিরে স্বস্তি এনে দেন নাঈম হাসান। এদিকে চা-বিরতির আগে ও পরে সফরকারীদের সর্বনাশটা করেন মিরাজ। তার নৈপুণ্যেই ক্যারিবীয়রা শেষ ৫ উইকেট হারায় মাত্র ৬ রানে।

চা বিরতির আগে দারুণ এক ডেলিভারিতে ব্ল্যাকউডকে (৬৮) লিটনের ক্যাচে সাজঘরে পথ দেখান তিনি। এদিকে চা বিরতির পর বল হাতে নিয়েই এ স্পিনার তুলে নেন কেমার রোচকে। মিরাজকে ছক্কায় ওড়াতে চেয়েছিলেন রোচ। কিন্তু টাইমিং না হওয়ায় বল চলে যায় ডিপ মিউ উইকেটে অতিরিক্ত খেলোয়াড় মোহাম্মদ মিথুনের হাতে। মাঝে এক ওভার পর কর্নওয়ালকে ফ্লাইটে বোকা বানিয়ে বোল্ড করেন তিনিই। আর ক্যারিবীয়দের ইনিংসের শেষটা তাইজুল টানেন ওয়ারিক্যানকে বোল্ড করে। যে কারণে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ পেয়ে যায় ১৭১ রানের বড় লিড।  

২৬ ওভারে ৬৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ইনিংসের সেরা বোলার মেহেদী হাসান মিরাজই। এদিকে নাঈম, তাইজুল ও মোস্তাফিজুর ২টি করে উইকেট নিয়েছেন যথাক্রমে ৫৪, ৮৪, ৪৬ রানে।

ভালো অবস্থায় থাকার পরও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই অস্বস্তিতে ভোগে বাংলাদেশ। তিন বলের ব্যবধানে স্বাগতিকরা হারায় তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্তকে। ইনিংসের প্রথম ওভারে রাকিম কর্নওয়ালের চতুর্থ বলে এলবিডব্লিয়ের ফাঁদে পড়েন তামিম। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। এক বল পর স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নাজমুল। ব্যাটের কানা বের করে খেলার মাশুল দিয়েছেন এ বাঁহাতি। এদিকে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি প্রথম ইনিংসে দারুণ খেলা সাদমান ইসলাম। এদিন শেনন গ্যাবিয়েলকে এ ওপেনার উপহার দিয়েছেন নিজের উইকেট। তা না হলে এমন শর্ট বল কেন খেলতে যেয়ে উইকেট রক্ষণ জশুয়া ডি সিলভাকে সহজ ক্যাচ দেন। এরপর অবশ্য দিনের বাকিটা সময় দারুণ ব্যাটিং করেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। অন্য প্রান্তে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন মুশফিকুর রহিম। যে কারণে আর কোন উইকেট না হারিয়ে নিরাপদেই ফেরেন তারা। শনিবার তাদের ব্যাটের উপরই আসলে খুব করে নির্ভর করছে প্রথম ইনিংসে পাওয়া লিড কতদূর টেনে নিতে পারে বাংলাদেশ। তবে তৃতীয় দিন শেষে স্পষ্টই কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টে বেশ এগিয়ে স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কর্নওয়াল ২টি ও গ্যাবিয়েল নিয়েছেন ১টি উইকেট।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০