Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 6:12 pm

মির্জা ফখরুলের বক্তব্য রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের অন্তরায়: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে দেওয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়াদুল কাদের। এক বিবৃতিতে তিনি এ বক্তব্যকে রাজনৈতিক মিথ্যাচার হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম সত্যকে আড়াল করে মনগড়া বক্তব্য জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন। তার উসকানিমূলক ও দূরভিসন্ধিমূলক, অসত্য বক্তব্য রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে বিনষ্ট করবে।

গতকাল আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা ওবায়দুল কাদেরের বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সফলতা যখন দৃশ্যমান, তখন বিএনপি মহাসচিবের এই ধরনের বক্তব্য দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রেরই ইঙ্গিত দেয়। রোহিঙ্গা ইস্যুর শুরু থেকেই বিএনপি মিথ্যা-বিভ্রান্তিকর ও ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দিয়ে আসছে। জাতি জানে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের অবৈধ ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে বিএনপি যতবার ক্ষমতায় এসেছে, তাদের সময় বাংলাদেশে ‘দুর্নীতি ও নতজানু পররাষ্ট্র নীতি’ ছাড়া স্বরাষ্ট্র বা পররাষ্ট্রনীতি বলতে আদৌ কিছু ছিল না। অবশ্য, যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, তাদের কাছে রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক শিষ্টাচার আশা করা যায় না।’

প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম দাবি করেন, ‘সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।’

এর জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের মানবিক উদ্যোগ এবং কূটনৈতিক তৎপরতা

জাতিসংঘসহ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর কূটনৈতিক দক্ষতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্ব গণমাধ্যম তাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ অভিধায় ভূষিত করেছে। একই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশ সফর করে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পদক্ষেপের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া পররাষ্ট্রনীতির আলোকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হচ্ছে। যার কারণে বাংলাদেশ আজ অপরাপর রাষ্ট্রের সঙ্গে সুদৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সব ধরনের স্বার্থ অক্ষুণœ ও পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান খোঁজার জন্য দ্বিপক্ষীয়-ত্রিপক্ষীয়সহ বহুপাক্ষিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোর দাবি তোলা হয়েছে এবং তা কার্যকর রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক আদালতের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের ওপর ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের কূটনৈতিক সফলতার কারণেই করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে বিভিন্ন দেশের নেতারা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উসকানিমূলক ও দূরভিসন্ধিমূলক, অসত্য বক্তব্য রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে বিনষ্ট করবে।

ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যমান সুসম্পর্কই বিএনপির গাত্রদাহের কারণ। কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত ও দূরভিসন্ধিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পুনরায় বিএনপির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রমাণ দিয়েছেন। বিএনপি মহাসচিবের মিথ্যাচারপূর্ণ বক্তব্যে জাতি হতাশ হয়েছে। তাদের কথা শুনে মনে হয়েছে বিএনপি রোহিঙ্গা সংকটের কোনো ধরনের সমাধান চায় না। জাতি জানতে চায়, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বিএনপি কী ভূমিকা রেখেছে? নিজেদের দুর্নীতিবাজ নেতাদের রক্ষার চেষ্টা ছাড়া আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের স্বার্থরক্ষা ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে তাদের ভূমিকা কী?