মো. আসাদুজ্জামান নূর: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। দিনভর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ারদরের উত্থান-পতন দেখা গেছে। বেড়েছে ১৫৬টির কোম্পানির শেয়ারদর, কমেছে ১৭১টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ৫৫টি, যার প্রভাবে ওঠানামা করতে করতে সূচকে যোগ হয়েছে ২১ পয়েন্ট। তবে লেনদেন কমে গেছে ৪০০ কোটি টাকার বেশি।
বছরের প্রথম কর্মদিবস ২ জানুয়ারি লেনদেন ছিল ৮৯৪ কোটি ১৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। সেটি বেড়ে ১১ জানুয়ারি হয় এক হাজার ৯৭৬ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। তবে এর পরের দুই দিনে কমে লেনদেন। সপ্তাহের শেষ দিন যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৪২ কোটি ৮৪ লাখ ১১ হাজার টাকায়।
খাতভিত্তিক লেনদেনের চিত্রে দেখা যায়, গতকাল চারটি খাতে পৃথকভাবে লেনদেন হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি। মোট লেনদেনের ৪৬ দশমিক ২৪ শতাংশই এ চার খাতের। খাতগুলো হলোÑজ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বিবিধ, প্রকৌশল ও বস্ত্র। এছাড়া লেনদেনে এগিয়ে ছিল ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, জীবন বিমা, ব্যাংক প্রভৃতি খাত।
সবচেয়ে বেশি ১৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ লেনদেন হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। বিবিধ খাতে ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ, প্রকৌশল খাতে ১০ শতাংশ ও বস্ত্র খাতে ৯ দশমিক ০৪ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এরপর ওষুধ ও রসায়ন খাতে সাত দশমিক ৮৭ শতাংশ, খাদ্য খাতে ছয় দশমিক ৬২ শতাংশ এবং জীবন বিমা ও ব্যাংক খাতে পাঁচ শতাংশের ওপর লেনদেন হয়েছে।
এদিকে খাতভিত্তিক দরবৃদ্ধি দেখা গেছে বিবিধ, ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, জীবন বিমা, ট্যানারি, টেলিযোগাযোগ, ভ্রমণ ও অবকাশ এবং কাগজ ও মুদ্রণ খাতে। এছাড়া অন্য খাতগুলোয় দরপতন হয়েছে।
গতকাল সূচক এক দিনের ব্যবধানে আবার ৭ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো এ ধাপ অতিক্রম করে ১১ জানুয়ারি। পরের দিন আবার তা নিচে নেমে আসে। পরদিন বৃহস্পতিবার তা ২১ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ১৭ পয়েন্টে। অন্য সূচকের মধ্যে ডিএসইএস ৬ ও ডিএস৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়েছে।
দিনভর টানাপড়েনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত সূচক বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকায় ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড। আগের দিন দর হারানো কোম্পানিটির দর এদিন বেড়েছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ৪ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট। টেলিকম খাতের গ্রামীণফোনের শেয়ারদর বেড়েছে পরপর দুই দিন। শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ৪ দশমিক ৩১ পয়েন্ট। আগের দিন দর হারানো সরকারি কোম্পানি তিতাস গ্যাসের দর এদিন বেড়েছে ৩ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট, কোম্পানিটি সূচক বাড়িয়েছে ২ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট। আগের দিন দর সর্বনি¤œ লেনদেন হওয়া বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ারদর এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন হয়েছে দিনের সর্বোচ্চ সীমায়। ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে সূচকে যোগ হয়েছে ২ দশমিক ৫২ পয়েন্ট। এ ছাড়া বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি ২ দশমিক ০৬ পয়েন্ট, স্কয়ার ফার্মা ১ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট, ব্র্যাক ব্যাংক ১ দশমিক ৬২ পয়েন্ট, লাফার্জহোলসিম ১ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স শূন্য দশমিক ৯৭ পয়েন্ট ও লিনডে বিডি শূন্য দশমিক ৯৫ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে। সব মিলিয়ে এ ২০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২৩ দশমিক ০১ পয়েন্ট।
অন্যদিকে সূচক সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে রবির দরপতনের কারণে। আগের দিন সূচকে ৪৩ পয়েন্ট যোগ করা কোম্পানিটি পরদিন সূচক কমিয়েছে ৩ দশমিক ০৪ পয়েন্ট। এ ছাড়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, এক্সিম ব্যাংক, আইসিবি, বিএসআরএম, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, পদ্মা অয়েল, ব্যাংক এশিয়া ও প্রাইম ব্যাংকও সূচক কিছুটা কমিয়েছে। সব মিলিয়ে এ ১০টি কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ৯ দশমিক ১৭ পয়েন্ট।