Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 4:17 pm

মিয়ানমারে কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা বাতিল করেছে স্যামসাং

শেয়ার বিজ ডেস্ক : প্রতিকূল প্রশাসনিক পরিবেশ ও দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ইলেকট্রনিকস পণ্যনির্মাতা দক্ষিণ কোরীয় প্রতিষ্ঠান স্যামসাং মিয়ানমারে কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা বাতিল করেছে। স¥ার্টফোন ও অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে মিয়ানমারে ওই কারাখানা স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল প্রতিষ্ঠানটির। খবর দ্য কোরিয়া টাইমস।

বিশ্বের স্মার্টফোন নির্মাতা শীর্ষ এ প্রতিষ্ঠানটির ভিয়েতনামে অন্তত তিনটি কারখানা রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মিয়ানমারের সস্তা শ্রম কাজে লাগিয়ে ওই কারখানা স্থাপনের কথা বিবেচনা করেছিল স্যামসাং।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে একটি উৎপাদন কারখানা স্থাপন না করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্যামসাং। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটি সম্প্রতি সফর করেন স্যামসাংয়ের প্রতিনিধিরা। সফর শেষে দেশে ফিরে তারা এ সিদ্ধান্ত নেন।

উৎপাদন কারখানা স্থাপন করতে কয়েক বছর ধরে কোরীয় এ প্রতিষ্ঠানের প্রতি ধারাবাহিকভাবে অনুরোধ জানিয়ে আসছে মিয়ানমার। দেশটির ইয়াঙ্গুন শহরে সম্প্রতি একটি বিপণন শাখা চালু করেছে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস। থাই স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের অধীনে তারা সেখানে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মিয়ানমারের একটি সূত্র বলছে, ‘সম্প্রতি প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাসহ স্যামসাংয়ের ছোট একটি প্রতিনিধিদল মিয়ানমার সফর করে। এ সময় তারা মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে দেশটিতে কারখানা স্থাপনের আগে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও রাস্তা তৈরির দাবি জানায় মিয়ানমার। ’

সূত্রটি আরও জানায়, ‘ওই বৈঠকের পর মিয়ানমারে কোনো ধরনের বিনিয়োগ না করার সিদ্ধান্ত নেয় স্যামসাং।’

এর আগে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে কোরীয় এ প্রতিষ্ঠানকে ইয়াঙ্গুনের কাছে একটি কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দেয় মিয়ানমার।

স্যামসাংয়ের কারখানা স্থাপন পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত এক কর্মকর্তা বলেছেন, মিয়ানমার স্যামসাংয়ের বিনিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে। দেশটির রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অগ্রহণযোগ্য পরিবেশসহ বেশ কয়েকটি কারণ স্যামসাংয়ের বিনিয়োগ না করার পেছনে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, সু চি দেশটির ক্ষমতায় আসার পর অনেকে প্রত্যাশা করেছিলেন অর্থনীতিতে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে, কিন্তু সেই আশায় গুড়েবালি। এখনও কোনো পরিবর্তন আসেনি।

তিনি আরও জানান, ‘এছাড়া দেশটি বিকেন্দ্রীকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ভাষাভাষী ও জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাত বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে সরকারের নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়া আরও জটিল ও অকার্যকর হবে।’

তবে মিয়ানমারে বর্তমানে বিনিয়োগের ব্যাপারে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত বিবেচনাধীন নেই বলে জানিয়েছে স্যামসাং কর্তৃপক্ষ। কোম্পানিটির একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা ২০১৩ সালে মিয়ানমারে টেলিভিশন কারখানা স্থাপনের চিন্তা-ভাবনা বিবেচনা করেছিলাম। অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও পানির সুবিধা না থাকায় এ সিদ্ধান্ত সেই বছরই বাতিল করা হয়। তারপর আর আমরা এ বিষয়টি নিয়ে কোনো ধরনের পর্যালোচনা করিনি।’