শেয়ার বিজ ডেস্ক: দুই দিনের সফরে গতকাল শুক্রবার মিয়ানমার পৌঁছেছেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। দেশটিতে নামার পর গার্ড অব অনার ও লালগালিচা সংবর্ধনা পেয়েছেন তিনি। তবে তার এ সফর সামরিক জান্তাকে আরও বৈধতা দিতে পারে শঙ্কায় দেশটির বিভিন্ন শহরে অভ্যুত্থানবিরোধীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। খবর: রয়টার্স।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত প্রশাসনকে উৎখাত করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারে এটাই প্রথম কোনো সরকারপ্রধানের সফর। দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে কূটনৈতিক উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান; কম্বোডিয়া এখন এ জোটের চেয়ারের দায়িত্ব পালন করছে।
ধারণা করা হচ্ছে, মিয়ানমারের সেনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে হুন সেন দুই দিনের সফরে দেশটিতে গেছেন।
সংকট নিরসনে গত বছরের এপ্রিলে মিয়ানমার ও আসিয়ান পাঁচ দফা ঐকমত্যে পৌঁছালেও জান্তা সরকার ওই শান্তি পরিকল্পনা কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে ইন্দোনেশিয়াসহ আসিয়ানের বেশ কয়েকটি দেশ তাদের হতাশা প্রকাশ করে আসছে।
এদিকে মিয়ানমারের অভ্যুত্থানবিরোধীরাও হুন সেনের সফরের বিরোধিতা করে বলছেন, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী তার সফরের মাধ্যমে সামরিক জান্তাকে সমর্থন জোগাচ্ছেন।
রাজধানী নেইপেদো থেকে ৩০০ কিলোমিটার উত্তরের শহর দেপায়িনে বিক্ষোভকারীরা কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর একটি পোস্টার পুড়িয়েছেন। তারা ‘হুন সেন মিয়ানমারে এসো না’ এবং ‘আমরা স্বৈরশাসক হুন সেনকে চাই না’ বলে সেøাগান দেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা পোস্টে দেখা গেছে। মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় এবং তানিনথারি ও মোনিওয়া অঞ্চলেও বিক্ষোভ হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে বুধবার এক ভাষণে হুন সেন মিয়ানমারের সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন ও শান্তি পরিকল্পনা অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, মিয়ানমারের ভাইয়েরা, আপনারা কি আপনাদের দেশকে সত্যিকারের গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে চান, নাকি এ অবস্থার সমাধান চান?
কয়েক দিন আগে হুন সেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইন্দোনেশিয়ার প্রধানমন্ত্রী জোকো উইদোদো টুইটারে দেয়া এক বার্তায় লেখেন, শান্তি পরিকল্পনায় উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি না হলে আসিয়ানের বৈঠকে কেবল অরাজনৈতিক প্রতিনিধিদেরই বসতে দেয়া উচিত। কিন্তু আসিয়ান বিভক্ত হয়ে পড়ার শঙ্কায় গত মাসে হুন সেন আসিয়ানের বৈঠকগুলোয় মিয়ানমারের জান্তা প্রতিনিধিদেরও অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া উচিত বল মন্তব্য করেছিলেন।
এবারের সফরে হুন সেন মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেও সু চির সঙ্গে দেখা করবেন না বলে জান্তার এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত রেডিও ফ্রি এশিয়া।