মীরসরাইয়ে অবৈধ বালি উত্তোলন হুমকিতে বসতবাড়ি ও মাছের ঘের

ইমাম হোসেন, মীরসরাই (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার ফেনী নদী অংশে ইজারাবিহীন অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নদীর তীর ঘেঁষা মানুষ ও মাছের ঘের। উপজেলার ৫নং ওসমানপুর ইউনিয়নের ফেনী নদীর অংশে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করছে প্রভাবশালী একটি মহল। যত্রতত্র বালি তোলায় নদী-তীরবর্তী এলাকাগুলোয় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে মাছের ঘেরসহ মানুষের বসতবাড়ি হুমকিতে পড়েছে।

এলাকাবাসী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সোনাগাজী কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দিনের পর দিন বোড ও কাটারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বালি উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে বালি উত্তোলনের প্রায় দু’শত একর মাছের ঘের ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিস্তীর্ণ এলাকা নতুন করে ভাঙনের মুখে পড়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ৫নং ওসমানপুর ইউনিয়নের ফেনী নদীর কোল ঘেঁষে আজমপুর, ফতেহপুর, পশ্চিম গোবিন্দপুর, পশ্চিম তাজপুর মৌজা অংশে ফেনী নদীর মোহনা ট্রলারে কাটা ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালি তোলা হচ্ছে। নদীর ওই পারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব বালি উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত বলে স্থানীয়রা কিছু বলার সাহস পায় না।

২০১০ সালের বালিমহল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উম্মুক্ত স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালি বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এ ছাড়া সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারাজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালি ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। হলেও এর পাশে রয়েছে বেড়িবাঁধসহ ফেনী রেগুলেটারের সুইস গেট, যা ওই বৃহত্তর অঞ্চলের চাষাবাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বালি উত্তোলনের ফলে বেড়িবাঁধসহ ফেনী রেগুলেটারের সুইস গেটটিও হুমুকি মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

জানা যায়, ফেনী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা জেলায় উন্নত মানের বালি সরবরাহের বিশাল খনি হিসেবে পরিচিত ফেনী নদীর বালিমহালগুলো। ইজারা ছাড়াই ফেনী নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন নদীতে অসংখ্য ড্রেজার মেশিন বসিয়ে হাজার হাজার ফুট সরকারি বালি লুট করে বিক্রি করছে এসব অসাধু বালি ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় নুরুল আমিন জানান, ফেনী নদীর মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় আজমপুর, ফতেহপুর, পশ্চিম গোবিন্দপুর, পশ্চিম তাজপুর মৌজা প্রতিনিয়ত ওই পাড়ের কিছু লোক প্রতিদিন ১৫-২০টি বোর্ড ও কাটার এর মাধ্যমে রাত ও দিনে চুরি করে আমাদের দীঘির পাশে বালি উত্তোলন করছে। নদীর গভীরে বালি উত্তোলনের প্রায় দু’শত একর মাছের ঘের ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মফিজুল হক মাস্টার বলেন, অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের বিষয়টি আমি জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান অবৈধ বালি উত্তোলনের বিষয়ে বলেন, আজমপুর, ফতেহপুর, পশ্চিম গোবিন্দপুর, পশ্চিম তাজপুর মৌজা কোনো ইজারা নেই। যদি কেউ অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০