মীরসরাইয়ে ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায় মুখর ঝরনাগুলো

প্রতিনিধি, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) : বর্ষার শুরুতে ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায় মুখর মীরসরাই উপজেলার সাতটি পাহাড়ি প্রাকৃতিক ঝরনাসহ পর্যটন স্পটগুলো। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকে বন্ধু-সহপাঠী, আবার অনেকে পরিবারের সদস্য, কেউ কেউ আত্মীয়স্বজন নিয়ে ঝরনার স্বচ্ছ পানিতে গা ভিজিয়েছেন। ঝরনা ছাড়া মীরসরাইয়ের অন্য পর্যটন স্পটেও মানুষের উপস্থিতি ছিল অনেক।

জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলা ঝরনার রানী হিসেবে সারাদেশে সুপরিচিত। দূর-দূরান্ত থেকে এখানে প্রতিদিন ছুটে আসেন ভ্রমণপিপাসু মানুষ। এবারের বর্ষায় মানুষের ঢল নেমেছে খৈয়াছড়া ঝরনা, রূপসী ঝরনা, হরিণাকুণ্ডু ঝরনা, নাপিত্তাছড়া ঝরনা, সোনাইছড়ি ঝরনা, বোয়ালিয়া ঝরনা ও মেলখুম ট্রেইলে। যদিও চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ মেলখুম ট্রেইলে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে পর্যটকরা সেখানেও ছুটছেন।

এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের মেরিন ড্রাইভ-খ্যাত সুপার ডাইকের কারণে সৃষ্টি হয়েছে দৃষ্টিনন্দন সমুদ্রসৈকত। এক খরচেই পর্যটকরা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন পাহাড় ও সমুদ্র। এ যেন এক ঢিলে দুই পাখি শিকার। ‘রথ দেখা ও কলা বেচা’র মতোই পাহাড় দেখতে এসে দেশের দূর-দূরান্তের পর্যটকরা বোনাস হিসেবে পাচ্ছেন সমুদ্রতীরে সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ।

মীরসরাইয়ের সমগ্র উপজেলায়ই সৈকত থাকলেও বিশেষ পরিচিতি পেয়েছে সাহেরখালী (ডোমখালী) সমুদ্রসৈকত ও মীরসরাই ইকোনমিক জোন সৈকত। এছাড়া মানুষের বেশ চাপ রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক মহামায়ায়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বড় দারোগাহাট থেকে মস্তান নগর পর্যন্ত বিভিন্ন ঝরনার রাস্তার মুখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বাস, মাইক্রো, হাইচ ও প্রাইভেটকার দাঁড়িয়ে রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব গাড়িতে করে পর্যটকরা ঝরনা দেখতে এসেছেন। আবার অনেকে লোকাল বাসে এসেছেন।

গাজীপুর থেকে ঘুরতে আসা আমেনা খানম ও খালেদ চৌধুরী  দম্পতি বলেন, খৈয়াছড়া ঝরনা অনেক সুন্দর। যে কেউ এ ঝরনার প্রেমে পড়তে বাধ্য। তবে আমরা হতাশ হয়েছি এর ব্যবস্থাপনা দেখে। এখানে টিকিট কেটে ঝরনা দেখতে হয়। কিন্তু পর্যটকদের জন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। নেই তেমন নিরাপত্তাব্যবস্থা।

চট্টগ্রাম থেকে নাপিত্তাছড়া ঝরনায় আসা বেসরকারি চাকরিজীবী ফরহাদ হোসেন বলেন, মীরসরাইয়ের পাহাড়ি ঝরনাগুলো অনেক সুন্দর। তবে আমার

কাছে বেশি ভালো লাগে নাাপিত্তছড়া ঝরনা। ঝরনাটি এক কথায় অসাধারণ। বর্ষাকালে এর সৌন্দর্য অনেক বেড়ে যায়।

মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, বর্ষায় ঝরনায় পর্যাপ্ত পানি থাকায় কারণে প্রচুর পর্যটক বাড়ে। পর্যটকদের সতর্কতার সঙ্গে আসা-যাওয়ার পাশাপাশি পর্যটককে সঙ্গে গাইড নিয়ে যাওয়ার এবং ঝরনার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে যেতে না পারেন, সে বিষয়েও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া আছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০