মুক্তবাণিজ্য এগিয়ে নিতে আগ্রহী চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতারা মুক্তবাণিজ্য এগিয়ে নেয়া, বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে নিজ নিজ অর্থনীতি শক্তিশালী করার ব্যাপারে আগ্রহী হয়েছেন। তারা এই উদ্যোগ এগিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। খবর: নিক্কেই এশিয়া ও কিয়োদো নিউজ।

তিন দেশের নেতারা কোরীয় উপদ্বীপে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধের বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। চার বছর পর আবার এক মঞ্চে বসেছিলেন চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ নেতারা।

গতকাল সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং, জাপানি প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল বৈঠকে বসেন। এর আগে ২০১৯ সালের শেষ দিকে এই তিন দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতারা চীনের চেংদুতে বৈঠকে বসেছিলেন। তখন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি বলেছিলেন, তিন দেশ ঐকমত্যে পৌঁছেছে যে, কোরীয় উপ-দ্বীপের সংকট সমাধানে একমাত্র কার্যকর উপায় হলো সংলাপ ও পরামর্শ। কোরীয় উপদ্বীপের সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক উপায়ে কাজ করতে আমরা তিন দেশ সম্মত হয়েছি।

সম্মেলনের পর প্রকাশিত একটি যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, তিন নেতা নিয়মিতভাবে এই ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলন ও মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে ত্রিমুখী সহযোগিতার ‘প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ’ করতে সম্মত হয়েছেন। তারা বলেছেন, ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পরবর্তী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে জাপানে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নেতারা একটি মুক্তবাণিজ্য চুক্তি বা এফটিএর জন্য আলোচনা ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাবেন। তাদের লক্ষ্য এমন একটি চুক্তিতে পৌঁছানো, যা অবাধ, ন্যায্য, ব্যাপক, উচ্চমানের এবং পারস্পরিকভাবে উপকারী হিসেবে সব পক্ষের জন্য সহায়ক হবে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের নভেম্বরে প্রথম চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথভাবে ঘোষণা দেয়, তারা মুক্তিবাণিজ্যসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে আলোচনা শুরু করবে। তারও আগে ২০০৮ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো এই চুক্তিতে উপনীত হওয়ার জন্য কাজ শুরু করে। এই চুক্তির ফলে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলোর চীনে করা বিনিয়োগের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অধিকার সংরক্ষিত হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো। কিন্তু ১৬ দফা আলোচনা চলার পর ২০১৯ সালের নভেম্বরে সেই আলোচনা থেমে যায় কভিড-১৯ মহামারির কারণে। এরপর চীন একাধিকবার এই আলোচনা শুরুর ব্যাপারে তাগাদা দেয়।

সর্বসাম্প্রতিক সিউলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও চীনের নেতারা কোরীয় উপদ্বীপে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তারা এমন এক সময়ে এই ঘোষণা দিয়েছেন, যার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে উত্তর কোরিয়া মহাকাশে আরও একটি নজরদারি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা ঘোষণা করে।

কোরীয় উপদ্বীপে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে যৌথ বিবৃতিতে এই তিন নেতা বলেন, আমরা যথাক্রমে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা, কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও অপহরণ ইস্যুতে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছি। আমরা কোরীয় উপদ্বীপের সমস্যার রাজনৈতিক নিষ্পত্তির জন্য ইতিবাচক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছি।

শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে এক বৈঠকে বসেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। বৈঠকের পর লি ছিয়াং বলেন, গত বছরের নভেম্বরে চীন ও জাপানের দুই নেতা যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোতে বৈঠক করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যে পৌঁছান। তারা দু’দেশের কৌশলগত ও পারস্পরিক উপকারী সম্পর্ক নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন। ফুমিও কিশিদা বলেন, গঠনমূলক ও স্থিতিশীল জাপান-চীন সম্পর্ক দুদেশ ও বিশ্বের জন্য উপকারী। জাপান চীনের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে এবং জাপান-চীন কৌশলগত পারস্পরিক উপাকারী সম্পর্ক জোরদার করতে ইচ্ছুক।

চীনের আশা, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া নিজেদের প্রতি শ্রুতি মেনে চলবে। তাইওয়ান ও অন্যান্য সমস্যা সঠিকভাবে সমাধান করবে, গঠনমূলক ও স্থিতিশীল সম্পর্ক গড়ে তুলে নতুন যুগের চাহিদা পূরণ করবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০