রবিউল আউয়াল রবি, ময়মনসিংহ: ‘সার নিয়ে বিপাকে ময়মনসিংহের কৃষক’ এ শিরোনামে দৈনিক শেয়ার বিজে গত ২৪ অক্টোবর রোববার একটি প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পর ময়মনসিংহের সব উপজেলার সার ডিলার, কৃষক ও কর্মকর্তাদের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় হয়েছে। প্রতিবেদনে ময়মনসিংহের সার ডিলাররা কৃষকদের কাছে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করে যে অনিয়ম করছিল, সেই তথ্য উঠে এসেছে। এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে এবং ঘটনা তদন্তে মুক্তাগাছা উপজেলার ১১ জন বিসিআইসির সার ডিলারদের শোকজ করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়। তাদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মুক্তাগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক শেয়ার বিজকে বলেন, শেয়ার বিজে প্রকাশিত সংবাদটি উপজেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি অফিস কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে ঘটনার তদন্তে উপজেলার ১১ জন ডিলারকে প্রাথমিকভাবে শোকজ করা হয়। পাশাপাশি তাদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়। এছাড়া ১১ জন ডিলারের মধ্যে তিনজন ডিলার জবাব দিয়েছে। বাকিরা এখনও জবাব দেয়নি। আমরা শিগগির সারের বাজার নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করব।
প্রসঙ্গত, চলতি আমন মৌসুমে ময়মনসিংহে সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সার। তবে সরকার নির্ধারিত দামেই সার বিক্রি হচ্ছে, অনুমোদিত ডিলাররা এমন দাবি করলেও খুচরা বিক্রেতারাই স্বীকার করছেন বেশি দামে সার বিক্রির কথা।
একাধিক খুচরা বিক্রেতা শেয়ার বিজকে জানিয়েছেন, ডিলাররা তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মুনাফার লোভে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাড়তি দাম রাখছেন। আর তারা বস্তা প্রতি ২৫ থেকে ৩০ টাকা কিংবা কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। খুচরা সার ব্যবসায়ীরা আরও বলছেন, চাহিদার তুলনায় ডিলাররা সার কম দেয়ায় বাজারে দাম বেড়েছে। আর কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, সারের ডিলাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একজোট হয়ে কারসাজি করে সারের দাম বাড়িয়েছেন।
অন্যদিকে কৃষকদের কাছ থেকে টিএপি, ডিএপি ও ইউরিয়াসহ বিভিন্ন সারের দাম বেশি নেয়া হলেও ডিলাররা কোনো পাকা রসিদ (ভাউচার) দিচ্ছেন না। এতে বেশি দামে সার বিক্রির বিষয়ে প্রমাণসহ কারও কাছে অভিযোগও দিতে পারছেন না কৃষকরা। এভাবে অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু ডিলার ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্যরা। আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেÑকৃষি, বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি উন্নয়ন।