মুক্তিযোদ্ধা দিবস পালনের সুপারিশে অগ্রগতি নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিসেম্বরের প্রথম দিন ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ পালনের সুপারিশ করার পর মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাজের কোনো ‘অগ্রগতি না থাকায়’ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গতকাল সংসদ ভবনে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা কত আগে এই সুপারিশ করেছিলাম। অথচ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো কিছুই জানাতে পারেনি, এটা নিয়ে কোনো কাজই করেনি। আমরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছি। আমরা একটা সার-সংক্ষেপ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাতে বলেছি। প্রধানমন্ত্রীর মতামত নিয়ে এই দিবস ঘোষণা করা যেতে পারে।’

২০২০ সালের অক্টোবরে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্রতিবছর ১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধা দিবস পালন করার প্রস্তাব দেয় সংসদীয় কমিটি। মন্ত্রণালয়ও এই প্রস্তাবে একমত হয়। তখন মন্ত্রণালয় জানায়, এই প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় তোলা হবে।

গতকালের বৈঠকে ওই সুপারিশের অগ্রগতি সম্বন্ধে জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রণালয় কমিটিকে জানায়, ‘এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।’

শাজাহান খান বলেন, “বছরের একটা দিন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দিবস রাখা দরকার। মুক্তিযোদ্ধারা অনাদিকাল বেঁচে থাকবেন না। পরের প্রজš§ তাদের অবদান সম্পর্কে জানতে পারবে। মুক্তিযোদ্ধাদের নামের আগে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘জাতীয় বীর’ উপাধি দিয়ে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের প্রথম দিনটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ হিসেবে ঘোষণার দাবি এর আগে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম থেকে করা হয়েছিল।”

২০০৪ সালের ১২ জানুয়ারি পল্টনে এক মহাসমাবেশ করার পর ওই বছর থেকেই সারাদেশে ১ ডিসেম্বরকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে ফোরাম।

বিষয়টি নিয়ে ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে শাজাহান খান বলেছিলেন, ‘সরকারি ঘোষণা না থাকলেও দিবসটি পালন করা হচ্ছে। সরকার যদি গেজেট করে একটা দিবস ঘোষণা করে, তখন সেটা পালন করার একটা বাধ্যবাধকতা থাকে। আমরা মন্ত্রণালয়কে বলেছি। তারা এখন সেটা মন্ত্রিসভায় তুলবে। মন্ত্রিসভা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’

মুক্তিযোদ্ধাদের সুবিধা-সংক্রান্ত বুকলেট প্রকাশ না করার কারণেও সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।

শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা কয়েক মিটিং আগে মুক্তিযোদ্ধাদের যেসব সুবিধা রাষ্ট্রীয়ভাবে দেয়া হয়, সেটা একটা বুকলেট করে তাদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য বলা হয়েছিল। এ বিষয়েও মন্ত্রণালয় বলেছে, কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আমরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছি। এটা তো কঠিন কোনো কাজ নয়। সবই তো আছে। একটা বুকলেট তৈরি করতে কী সমস্যা?’

বৈঠকে বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোয় মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের তদারকি করার সুপারিশ করা হয়। স্বাধীনতার স্মৃতি রক্ষার্থে কালুরঘাট বেতার কেন্দে  একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি কাকরাইলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জমিতে প্রকল্প নিতে কর্মপরিকল্পনা তৈরির জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়। শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ, রফিকুল ইসলাম, বীর উত্তম ও ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল অংশ নেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০