ক্রীড়া ডেস্ক: নক আউট পর্ব আসলে শুরু হয়েছে শেষ ষোলোর লড়াই থেকে, যা থাকছে একেবারে ফাইনাল পর্যন্ত। তবে অতদূর পর্যন্ত এখনই ভাবতে চাইছে না কোনো দল। সবার লক্ষ্য আপাতত সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় নিজনি নোভগ্রাদে ফ্রান্সের বিপক্ষে লড়বে উরুগুয়ে। অন্য ম্যাচে রাত ১২টায় কাজান অ্যারানায় মহারণে নামছে ব্রাজিল-বেলজিয়াম।
রাশিয়া বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার ফ্রান্স, উরুগুয়ে, ব্রাজিল ও বেলজিয়াম। কিন্তু আজ কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে যেকোনো দুটি দলকে ধরতে হবে দেশের বিমান, যে কারণে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামার আগে চার দলই সতর্ক। এরই মধ্যে দলগুলো নিয়েছে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি।
চলতি বিশ্বকাপের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছে উরুগুয়ে ও ফ্রান্স। এখন পর্যন্ত এ দুটি দল হারেনি একটি ম্যাচও। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই তারা জায়গা করে নিয়েছিল শেষ ষোলোতে। সেখানে পর্তুগালকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টারে জায়গা করে দলটি। অন্যদিকে নান্দনিক ফুটবল উপহার দিয়ে আর্জেন্টিনাকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ফ্রান্স জায়গা করে নেয় শেষ আটে। সব মিলিয়ে আজ উরুগুয়ে ও ফ্রান্সের মধ্যে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইটি হবে জমজমাট। এমনটাই আশা করছেন দু’দলের সমর্থকরা।
তবে আজ সবার দৃষ্টি থাকবে কাজান অ্যারেনায়। কেননা সেখানে যে নামবে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম। এরই মধ্যে নানা অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছেন দর্শকরাÑএ ম্যাচে কে জিতবে, কে হারবে? তবে শক্তির বিচারে বেলজিয়ামের চেয়ে এগিয়ে ব্রাজিল। কেননা এর আগে চারবারের মোকাবিলায় বেলজিয়ামকে তিনবারই হারিয়েছে ব্রাজিল। ১৯৬৩ সালে প্রথমবার মুখোমুখিতে বেলজিকরা ৫-১ গোলের জয় তুলে নিয়েছিল। কিন্তু এরপর ব্রাজিল ১৯৬৫ সালে ৫-০, ১৯৮৮ সালে ২-১ এবং সর্বশেষ ২০০২ সালে ২-০ গোলে জিতেছিল। বিশ্বকাপ মঞ্চে এ দুই দলের দেখা সেই একবারই ২০০২ সালে জাপানের মাটিতে।
যদিও এবারের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের পথ চলাটা শুরু হয়েছিল সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র দিয়ে। তবে গ্রুপ পর্বে বাকি দুটি ম্যাচ জিতে দলটি ঠিকই জায়গা করে নেয় শেষ ষোলোয়। সেখানে মেক্সিকোকে ২-০ গোলে হারিয়ে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা নিশ্চিত করে কোয়ার্টার ফাইনাল। এখন তিতের শিষ্যদের দৃষ্টি আরও বড়। সেটা নিশ্চয়ই ট্রফি। আপাতত সে লক্ষ্যে দারুণভাবে ছুটছে দলটি।
সেমিফাইনালে উঠতে ব্রাজিলকে আশা দেখাচ্ছেন নেইমার। ফিলিপ্পে কৌতিনহোর সঙ্গে তার জুটিটাও জমেছে বেশ। এদিকে উইলিয়ান তাদের দিচ্ছেন যোগ্য সঙ্গ। তবে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের রক্ষণভাগের কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে মার্সেলো ও দানিলোর মতো দুজন ইনজুরিতে থাকায়। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিকদের বিপক্ষে নামার আগেই এ দুজন একাদশে যোগ হবেন। তখন রোমেলু লুকাকু, এডেন হ্যাজার্ড, মারুয়ান ফেলাইনিদের আক্রমণ ঠেকাতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন। অভিজ্ঞ থিয়াগো সিলভা তো আছেনই। এবার নিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বাধিক ১৬ বার কোয়ার্টার ফাইনাল খেলবে ব্রাজিল। সর্বাধিক পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটি বিশ্বকাপে সর্বাধিক ২২৮ গোল করেছে। শেষ আটে বেলজিয়ামের বিপক্ষে নামার আগে অবশ্য সেলেসাওদের বেশ কোমর বেঁধেই নামতে হবে। দুর্ধর্ষ একটি দল হিসেবে ইতোমধ্যেই বেলজিকরা প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছে, যদিও দ্বিতীয় রাউন্ডে ‘ব্ল– সামুরাই’-খ্যাত জাপানকে হারাতে শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে হয়েছে তাদের। এবার আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ তাদের সামনে।
ফিফা র্যাংকিংয়ে বর্তমানে ৩ নম্বরে অবস্থান বেলজিয়ামের। আর ব্রাজিলের অবস্থান ২ নম্বরে। সুতরাং শক্তিমত্তার তেমন তারতম্য নেই দু’দলের মাঝে। গত বিশ্বকাপ থেকেই বেশ সুশৃঙ্খল দলে পরিণত হয়েছে ইউরোপের এ দেশটি। সেবার ব্রাজিলের মাটিতে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় ঘটেছিল। কিন্তু এবার সেই সাফল্য ছাপিয়ে যেতে উম্মুখ লুকাকু-হ্যাজার্ডরা।
