ক্রীড়া প্রতিবেদক : জিতলেই ইতিহাস। সে লক্ষ্য পূরণে গত পরশু বাংলাদেশের দরকার ছিল ১৭৫ রান। কিন্তু নাগপুরে শুরুতেই লিটন দাস ও সৌম্য সরকারকে হারিয়ে বিপদে পড়েছিল সফরকারীরা। সেখান থেকে দলকে বের করে এনেছিলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ম্যাচে জয়ের সম্ভাবনা জেগেছিল মূলত তার কল্যাণেই। শেষ পর্যন্ত সেটা না হলেও ঠিকই এ তরুণ ছড়িয়েছেন মুগ্ধতা।
সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে নাঈম শুরুটা করেছিলেন দেখেশুনে। এরপর যখন শট খেলতে থাকেন, তখন পুরো মাঠ ও গ্যালারিজুড়ে সুনশান নীরবতা! বাংলাদেশি এই তরুণের পাওয়ার ব্যাটিং দেখে দর্শক পর্যন্ত বিস্মিত ও হতবাক। তাদের কারোর জানাই ছিল না এমন ব্যাটিং করতে পারেন তিনি! সেই বিস্ময়ের ঘোর কাটতে না কাটতেই তারা দেখল ম্যাচ জয়ের অবস্থানে দাঁড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। যার পুরো কৃতিত্ব মোহাম্মদ নাঈমের ঝলমলে ৮১ রানের ইনিংস।
চাহালের প্রথম ওভারের প্রথম তিন বলেই চার হাঁকান মোহাম্মদ নাঈম। সেই ওভারে বাংলাদেশ ওপেনার নেন ১৪ রান। ওই ওভার থেকে বাংলাদেশ নিতে পেরেছিল ১৫ রান।
তৃতীয় উইকেটে মোহাম্মদ মিথুনকে নিয়েই নাঈম পথ চলছিলেন। সে ধারাবাহিকতায় এ বাঁহাতি মাত্র ৩৪ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি পুরো করেন। সে সময় তার ব্যাট থেকে আসে ৭ চার ও ১ ছয়। তার এসব শটস দেখে লিজেন্ড সুনীল গাভাস্কার পর্যন্ত উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
হাফ সেঞ্চুরির পর নাঈমের ইনিংস আরও বেশি পরিণত ও একটা দৃঢ়তার ছাপ রেখেছে। নাগপুরে ৪৮ বলে তার ৮১ রানের ইনিংস হয়তো বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতাতে পারেনি। তবে ১০ চার ও ২ ছয়ে তার এ ইনিংস জানিয়ে দেয়Ñতামিম ইকবালের সঙ্গী হিসেবে তরুণ এক বাঁহাতি ওপেনারকে পেয়ে গেছে বাংলাদেশ!
নাঈমের ৮১ রানের ইনিংস টি-টোয়েন্টিতে ভারতের বিপক্ষে খেলা বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের সেরা ইনিংস। এর আগে দিল্লিতে ২৮ বলে ২৬ রান, রাজকোটে ৩১ বলে ৩৬ রান করেছিলেন তিনি।
নাগপুরে ৮১ রানের ইনিংস খেলার পর নাঈম বলেন, ‘ম্যাচ শেষ করে আসতে পারলে তো যে কোনো ব্যাটসম্যানের ভালো লাগার কথা। আমি এ ম্যাচটি শেষ করে আসতে পারিনি, এটা ঠিক আফসোস নয়। আমি মনে করি, এখান থেকে শেখার আছে অনেক কিছু। শিখলাম যে, এ পরিস্থিতিতে কীভাবে খেলা উচিত ছিল, কীভাবে ম্যাচ বের করে নিয়ে আসতে হয়।’
ভারতের কাছে সিরিজ হারলেও নাঈম নিজেকে চিনিয়েছেন একজন জাত ওপেনার হিসেবে। সব মিলিয়ে তিন ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৭.৬৬ গড়ে ১৪৮ রান। যা করতে তিনি খরচ করেন ১৪৮ বল। চার ১৭টি আর তিনটি ছক্কা ছিল। স্ট্রাইক রেট ১৩৩.৬৪।