Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 2:21 am

মুজিব শতবর্ষে দেশের প্রতিটি ঘর আলোকিত হবে: প্রধানমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক: মুজিব শতবর্ষের মধ্যে দেশের সব মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনার মাধ্যমে প্রতিটি ঘরকে আলোকিত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের ৬৪টি জেলার মধ্যে প্রায় ৪০টি এখন পুরোপুরি বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। বাকি জেলা ও উপজেলাকেও (শতভাগ বিদ্যুতের) আওতায় এনে মুজিব শতবর্ষে প্রতিটি ঘরকে আলোকিত করব। এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে পাঁচটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

বর্তমানে বাংলাদেশের আটটি বিভাগের ৬৪টি জেলায় মোট ৪৯২টি উপজেলা রয়েছে। ফলে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আসতে বাকি আছে ৮২টি উপজেলা। ‘বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও পিছিয়ে থাকবে না,’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর বেশি জোর দিয়েছি। এ পর্যন্ত সারা দেশে আমরা ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলেছি। প্রযুক্তিতে সারা বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, সে কারণে আমরাও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে আমরা এমনভাবে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে চাই যেন বিশ্বের উন্নত দেশের শিক্ষার্থীদের চাইতে কোনো অংশে পিছিয়ে না থাকে। আমরা আইসিটি ও কর্মমুখী শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছি। আমরা প্রযুক্তিনির্ভর জাতি গড়ে তুলতে চাই। এজন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস, কর্মমুখী শিক্ষা ও আইটি শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আজ অনেকেই আউটসোর্সিং করে অনেক টাকা রোজগার করছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৯৬ সালে একটি মোবাইলের দাম ছিল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। বিএনপির একজন নেতা এই মোবাইল কোম্পানির মালিক ছিলেন। তখন একটি কল ধরলেও ১০ টাকা, একটি কল করলেও ১০ টাকা মিনিট খরচ হতো। এখন আমাদের হাতে হাতে মোবাইল। আমাদের তরুণরা মোবাইলের মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ করছে। আজ প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আগামী ’৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত একটি দেশ হবে এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়া আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন বিশ্বের মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে, সেজন্য আমরা ২১০০ সালকে সামনে রেখে ডেল্টাপ্ল্যান-২১০০ ঘোষণা করে কাজ করে যাচ্ছি।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক, রাজশাহীতে নির্মিত ‘শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার’-এর ওপর একটি ভিডিওচিত্র পরিবেশন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এএনএম জিয়াউল আলম। বিদ্যুৎ বিভাগের ওপর উপস্থাপনা ও ভিডিওচিত্র পরিদর্শন করেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. সুলতান আহমেদ।

গতকাল উদ্বোধন করা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক, রাজশাহীতে নির্মিত শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার, শতভাগ বিদ্যুতায়িত সাতটি জেলা, একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং ১৮টি জেলার ২৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন।

সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন ও সংশ্লিষ্ট উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বেলা ১১টায় বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের মাসব্যাপী নাট্যোৎসবের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।