শেয়ার বিজ ডেস্ক: বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশের মুদ্রার মান ধীরে ধীরে অবনমনের দিকে যাচ্ছে। এর ফলে ওইসব দেশে খাদ্য ও জ্বালানি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশগুলো বর্তমানে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের যে সংকট মোকাবিলা করছে, তা আরও প্রলম্বিত হতে পারে। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, বৈশ্বিক মন্দা উদ্ভূত হওয়ার শঙ্কায় ডলারের বিপরীতে বিভিন্ন পণ্যের দাম হ্রাস পেয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর এ পর্যন্ত অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ডলারের বিপরীতে ছয় শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অথচ মুদ্রার মান কমে যাওয়ার ফলে এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়নশীল অর্থনীতি ও উদীয়মান দেশগুলোয় জ্বালানির দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। নিজেদের মুদ্রার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে এসব দেশগুলোর মধ্যে ৯০ শতাংশের ক্ষেত্রে গমের দাম ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
জ্বালানি পণ্য কৃষি উৎপাদনের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। ফলে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় এসব দেশে খাদ্যপণ্যের দাম হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি গড়ে ২০ শতাংশেরও বেশি হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবীয় অঞ্চল, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, সাব-সাহারা আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়েছে গড়ে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ। কেবল পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কম হারে বেড়েছে। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট পাবলো সাভার্দা বলেন, অনেক নিত্যপণ্যের দাম এরই মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কিছুটা নিচে নেমেছে। তবে বর্তমানে যে দাম রয়েছে, সেটিও গত পাঁচ বছরের গড় দামের তুলনায় অনেক বেশি। এর পরে যদি নতুন করে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পায় এবং বর্ধিত দাম দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে বিষয়টি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হবে।