শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর গত বুধবার ওয়াল স্ট্রিটে সূচকের পতন হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্য সংকট, যা পতনে ভূমিকা রেখেছে। খবর: এপি।
এদিন বাজার শুরুর পর এসঅ্যান্ডপি সূচক কমে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। সকাল পৌনে দশটায় ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজের সূচক ১১০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কমে। অন্য সূচক নাসডাকের পতন হয় শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।
ওয়াল স্ট্রিটের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের শেয়ারদর কমেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২৩ সালে বিশাল মুনাফা করেছে এই এয়ারলাইন্সটি। তবে তেলের দাম বৃদ্ধি এবং তেল আবিবে ফ্লাইট বাতিল করায় তাদের শেয়ারে ধস নেমেছে।
অন্য এয়ারলাইন্সগুলো পতনের ধারায় ছিল। এর মধ্যে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের সূচক কমে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। ৪ দশমিক ১ শতাংশ শেয়ারদর কমে ডেল্টা এয়ার লাইন্সের।
বিনিয়োগ কোম্পানি মরগান স্ট্যানলির শেয়ারদর বেশ টালমাটাল ছিল। তাদের শেয়ারদর কমে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। সর্বশেষ প্রান্তিকে বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের তুলনায় বেশি মুনাফা করলেও পুঁজিবাজারে পতন হয়েছে।
অন্যদিকে ওয়াল স্ট্রিটে প্রোক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলের উত্থান হয়েছে। শেষ প্রান্তিকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মুনাফা করার পর তাদের শেয়ারদর বেড়েছে ৩ শতাংশ। পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে তাদের রাজস্ব আয় বেড়েছে।
এছাড়া এলিভ্যান্স হেলথের শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ। স্বাস্থ্য সেবা খাতের এই প্রতিষ্ঠানটিও প্রত্যাশার তুলনায় বিপুল লাভ করেছে এবং আরও মুনাফার পূর্বাভাস দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো গ্রীষ্মকালীন আয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০-এ তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে প্রথমবারের মতো বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের প্রবৃদ্ধি পুঁজিবাজারে উত্থানের জন্য অপরিহার্য, বিশেষ করে যখন বড় কোনো ঘটনা পুঁজিবাজারকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে ট্রেজারি বন্ড বাজারও ঊর্ধ্বগতিতে রয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ বা ফেড মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি সুদহার বৃদ্ধি করতে পারে এমন আশঙ্কার মধ্যেও বিনিয়োগকারীরা বন্ড বাজারে স্থিতিশীলতা আশা করছেন। উচ্চ সুদহার এবং বন্ডের দরপতন শেয়ারদর ও অন্য বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত করে।
গত মঙ্গলবার দিনের শেষে ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের দাম ৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪ দশমিক৮৪ শতাংশ হয়, যা গ্রীষ্মকালের তুলনায় ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ কম।
বুধবার এশিয়ার পুঁজিবাজারে মিশ্র প্রবণতা দেখা যায়। ইউরোপের সূচকগুলোও নিন্মগামী ছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার এশিয়ার পুঁজিবাজারও টালমাটাল ছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, ওয়াল স্ট্রিটের মতো একই ধারায় চলছে এশিয়ার বাজারগুলো। হংকং, টোকিও ও সিউলের প্রধান সূচকগুলোয় ২ শতাংশ করে পতন হয়। টোকিওর নিক্কেই ২২৫ সূচক ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ৩১ হাজার ৪৩০ দশমিক ৬২ পয়েন্টে অবস্থান করে। সিউলের কোসপি সূচকও ১ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৪১৫ দশমকি ৮০ পয়েন্ট হয়। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রেখেছে।
অন্যদিকে হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক কমেছে ২ দশমিক ২ শতাংশ। এতে ১৭ হাজার ৩৪৯ দশমকি ৭৯ পয়েন্ট হয়। সাংহাই কম্পোজিট সূচকে ১ দশমিক ৬ শতাংশ পতন বা ৩ হাজার ০১০ দশমিক ০৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান সূচক এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৯৮১ দশমিক ৬০ পয়েন্টে দিন শেষ হয়।
এদিকে ভারতের প্রধান সূচক সেনসেক্সে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ পতন হয় এবং ব্যাংককের সেট হারায় শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। এদিন এসঅ্যান্ডপি ৫০০, ডাও জোনস ও নাসডাক যথাক্রমে ১ দশমিক ৩, ১ ও ১ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে।
