মুনাফা হচ্ছে না বলে কেউ বিনিয়োগ করছেন না

বাজার থেকে মুনাফা করা যাচ্ছে না এটাই বড় সমস্যা। বলা হয় ‘মানি নেভার সিøপ’ তাই কোথাও না কোথাও অর্থের সঞ্চালন আছে। বাজারে মুনাফা করা যাচ্ছে না বলে এখানে কেউ বিনিয়োগ করছেন না। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এনএলআই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মুহা. শাহেদ ইমরান এবং পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ইঞ্জিনিয়ার রহমত উল্যাহ।

মুহা. শাহেদ ইমরান বলেন, ১০ হাজার কোটি টাকার বিষয়টি বেশ কিছুদিন ধরে আলোচিত হচ্ছে। গত কয়েক বছর ক্রমাগত বাজারের পতনের কারণে অনেক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী অর্থ সংকটে ভুগছে। দর পতনের কারণে অনেকেই শেয়ার বিক্রি করতে পারছে না। এতে করে নতুন ফান্ডের সংকট তৈরি হয়েছে। আর এ সমস্যা সমাধানের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নতুন ফান্ড সংগ্রহ করার। মূলত মার্চেন্ট ব্যাংকের সিইওদের একটি সংগঠন থেকে এ প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। আর এ সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়। একইসঙ্গে বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) জানানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, সরকার এ অর্থ সরবরাহ করবে। এ অর্থ বাজারের গতি আনতে কতটুকু ভূমিকা রাখবে সেটা নিশ্চিত না হলেও এটা নিশ্চিত যে, বাজারে অর্থ সংকট রয়েছে। যদি এ অর্থ পাওয়া যায় তাহলে শেয়ার কেনাবেচায় একটা গতি ফিরবে। এতে করে ধীরে ধীরে বাজার চাঙা হবে।

তিনি আরও বলেন, আইপিও হচ্ছে বাজারের প্রাণ। গত কয়েক বছরে বেশকিছু কোম্পানি আইপিও আবেদন করলেও তার আর অগ্রগতি দেখা যায়নি। গণমাধ্যমের একটি রিপোর্টে দেখলাম, গত ৯ বছরে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ কমেছে ৮১ শতাংশ। কিন্তু বাজারের জন্য নতুন নতুন ভালো আইপিও দরকার। আমাদের বাজারে পণ্যের বৈচিত্র্য আনা প্রয়োজন। আমরা কেব্ল ইকুইটি নিয়ে ট্রেড করছি। এ বাজারে অনেক চেষ্টা করেও বন্ড আনতে পারছি না। ইকুইটি মার্কেট বেশ ঝুঁকিপূর্ণ, তাই বন্ড এলে মানুষ নির্দিষ্ট হারে উপার্জন করতে পারবে। এতে বাজারে ক্রেতা আসবে। বাজারের গতি বাড়বে। তবে সেই বন্ড অবশ্যই সিকির্উড হতে হবে। এটা সরকার ও অন্যান্য সংস্থাকে নিশ্চিতের জন্য কাজ করতে হবে।

ইঞ্জিনিয়ার রহমত উল্যাহ্ বলেন, ১০ হাজার কোটি টাকার কথা বলা হলেও এটা সত্য যে, অর্থ কোনো সমস্যা নয়। বরং বাজার থেকে মুনাফা করা যাচ্ছে না এটাই বড় সমস্যা। বলা হয় ‘মানি নেভার সিøপ’ তাই কোথাও না কোথাও অর্থের সঞ্চালন আছে। বাজারে মুনাফা করা যাচ্ছে না বলে এখানে কেউ বিনিয়োগ করছেন না। এখন একটি প্রশ্নের উত্তর জানা দরকার যে এই ১০ হাজার কোটি টাকা পুঁজিবাজারের জন্য প্রয়োজন, না প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রয়োজন? আমার মনে হয়, বাজারের জন্য কোনো নগদ অর্থের প্রয়োজন নেই। তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা যেহেতু এ বাজারের স্টেকহোল্ডার, তাই তাদের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা জরুরি। এ দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের অর্থ দেওয়া যেতে পারে। তবে গত ১০ বছরে প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পতনমুখী বাজারে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় খুব একটা অগ্রগতি দেখাতে পারেননি। ভবিষ্যতে যেন সেই ঝুঁকি মোকাবিলা যথাযথভাবে হয়, সেটা নিশ্চিত করে এ অর্থ সরবরাহ করা উচিত।

শ্রুতিলিখন: হাসানুজ্জামান পিয়াস

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০