ক্রীড়া ডেস্ক : চট্টগ্রাম টেস্ট দারুণ কাটছে মেহেদি হাসান মিরাজের। প্রথম ইনিংসে অসাধারণ সেঞ্চুরির পর বল হাতে দেখান ভেলকি। গতকাল আবার তিনি জ্বলে ওঠেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডার একাই ধসিয়ে দেন। এর আগে ক্যারিয়ারের রেকর্ড ১০ম সেঞ্চুরি তুলে বাংলাদেশকে ৪০০ ছুঁই ছুঁই লিড এনে দেন মুমিনুল হক। তাদের নৈপুণ্যে ভর করে স্বাগতিকরা দেখছে জয়ের স্বপ্ন। এজন্য টাইগারদের দরকার মাত্র ৭ উইকেট।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকাল ৮ উইকেট ২২৩ রান করে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। মুমিনুল একাই করেছেন দলের অর্ধেকের বেশি রান। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১০ চারে ১৮২ বলে ১১৫ রান। তামিম ইকবালকে (৯) পেছনে ফেলে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন মুমিনুলের (১০) দখলে। এদিকে ১১৫ বলে ৬৯ রান করেন লিটন দাস।
আগের ইনিংসে ১৭১ রানে এগিয়ে থাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে গতকাল বাংলাদেশ লক্ষ্য ছুড়ে দেয় ৩৯৫ রান। এরপর বল হাতে নিয়ে ১১০ রান দিয়ে সফরকারীদের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে দিন শেষ করে টাইগাররা। সব মিলিয়ে সফরকারীরা এখনও চট্টগ্রাম টেস্টে ২৮৫ রানে এগিয়ে। তাই জয়ের স্বপ্ন বুনছে মুমিনুলের দল।
জিততে হলে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়তে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। সে লক্ষ্যে ভালোই শুরু করেছিলেন সফরকারী দলের দুই ওপেনার ক্রেগ ব্রাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল। তারা ধীরে ব্যাটিং করে ৩৯ রানও করেছিলেন। কিন্তু ১৭তম ওভারের প্রথম বলে ক্যাম্পবেলকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। তাকে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে পাননি ক্যাম্পবেল (২৩)। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। নিজের পরের ওভারে ব্রাথওয়েটকে তুলে নেন এ অলরাউন্ডার। শর্ট লেগে বদলি ফিল্ডার ইয়াসির আলীর ক্যাচে তিনি পরিণত করেন উইন্ডিজ অধিনায়ককে। এর কিছুক্ষণ পর শেন মোজলিকেও এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। শেষ দিকে মোস্তাফিজুর রহমান ক্যাচ মিস না করলে আরেকটি সাফল্য নিয়েই দিন শেষ করতে পারত বাংলাদেশ। উইকেটে রয়েছেন এনক্রুমা বোনার (১৫) ও কাইল মায়ার্স (৩৭)। চতুর্থ উইকেটে তাদের জুটি অবিচ্ছিন্ন রয়েছে ৫১ রানে। হয়তো তাই ম্যাচ বাঁচানো বা জয়ের আশাও করছে সফরকারীরা।
এক পেসার নিয়ে মাঠে নামায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে যত দ্রুত সম্ভব আজ অলআউট করতে চায় চার স্পিনারনির্ভর বাংলাদেশ। চোটের কারণে সাকিব আল হাসানের সার্ভিস পাচ্ছে না টাইগাররা।
এর আগে গতকাল ৩ উইকেটে ৪৭ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু দ্রুতই মুশফিকুর রহিমকে হারায় স্বাগতিকরা। ১৮ রান করে রাকিম কর্নওয়ালের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। এরপর দলকে এগিয়ে নেন মুমিনুল ও লিটন দাসের জুটি। পঞ্চম উইকেটে তারা গড়েন ১৩৩ রানের জুটি। এরপরই ধৈর্য হারান লিটন। হঠাৎ ওয়ারিক্যানকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনেন তিনি। মায়ার্সকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১১৫ বলে ৬৯ রান করে। পরের ওভারে বিদায় নেন মুমিনুলও। গ্যাব্রিয়েলের বলে চার হাঁকিয়ে তিন হাজার রান পূর্ণ হয় তার। বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম তিন হাজার রানের রেকর্ডে স্পর্শ করেন তামিমকে (৭৬ ইনিংস)। কিন্তু পরের বলেই ছক্কা মারার চেষ্টায় ধরা পড়েন সীমানায়।
মুমিনুল ফেরার পর ওয়ারিক্যানের এক ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন তাইজুল ইসলাম ও মিরাজ। ১৭ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে অলআউট হওয়ার শঙ্কা পেয়ে বসেছিল বাংলাদেশকে। এর মধ্যেই দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেন অধিনায়ক মুমিনুল। সফরকারীদের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন রাকিম কর্নওয়াল ও জোমেল ওয়ারিক্যান।