প্রতিনিধি,রাজশাহী: চাহিদা কমায় রাজশাহীতে কমেছে মুরগি ও ডিমের দাম। তবে বেড়েছে মাছের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ২০০ টাকা বেড়েছে। গতকাল শনিবার সকালে রাজশাহীর সাহেববাজার, নিউমার্কেট মাস্টারপাড়া, শালবাগান সবজিবাজার ঘুরে এমনটা জানা যায়।
জানা যায়, গত সপ্তাহে হঠাৎ করে ডিম ও মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তার চাহিদা কমে গেছে। এছাড়া রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ অভিযান চলমান রয়েছে। এসব কারণে চলতি সপ্তাহের শুরুতে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে মাছের দাম বেড়েই চলছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে বড় ইলিশ এক হাজার ৭০০ টাকা ও ছোট ইলিশ ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ২০০ টাকা বেড়ে বড় চিংড়ি দুই হাজার টাকা ও দেশি চিংড়ি ১০০ টাকা বেড়ে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আইড় মাছের দাম ১০০ টাকা বেড়ে ৬০০ টাকা, ২০০ টাকা বেড়ে গুচি এক হাজার ২০০ টাকা, ১০০ টাকা বেড়ে বাইন মাছ ৮০০ টাকা, ৩০ টাকা বেড়ে রুই মাছ ২৫০ টাকা ও সিলভার কার্ফ ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে পাবদা মাছের দাম, বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা দরে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ২০০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নি¤œ আয়ের মানুষরা। সাহেববাজারে মাছ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। আগে যা বেতন পেতাম এখনও তা-ই। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। আজ মাছের বাজারে এসে তো পুরোপুরি মাথা খারাপ হওয়ার মতো অবস্থা। গত সপ্তাহের তুলনায় আজ মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ২০০ টাকা বেড়েছে। এভাবে যদি প্রতি সপ্তাহে মাছের দাম বাড়ে, তাহলে আমাদের মতো নি¤œ আয়ের মানুষদের মাছ খাওয়াও ছেড়ে দিতে হবে।’
ফারজানা আক্তারও মাছ কিনতে এসে পড়েছেন বিপাকে। তিনি বলেন, ‘বাজারে এসে দেখি গত সপ্তাহের চেয়ে মাছের দাম আবার বেড়ে গেছে। কিছু বলার নেই। তাই যেখানে দুই কেজি মাছ কিনতাম, সেখানে হয়তো এক কেজি কিনব। আমাদের খেয়ে তো বাঁচতে হবে।’
দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করে মাছ বিক্রেতা জয়নাল বলেন, বৃষ্টি ও মেঘের কারণে জেলেরা মাছ ধরতে পারছে না। ফলে বাজারে মাছ কম আসছে। আর আমদানি কম থাকার কারণে আমরা চাহিদা অনুযায়ী মাছ সরবরাহ করতে পারছি না। তাই মাছের দামটা একটু বেশি।
এদিকে মুরগি ও ডিমের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কমেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৫ টাকা কমে কেজিপ্রতি ১৬৫ টাকা, অপরিবর্তিত থেকে সোনালি মুরগি ২৭০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা কমে লাল ডিম হালিপ্রতি ৩৮ টাকায় এবং সাদা ডিম ৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে অপরিবর্তিত রয়েছে সবজির বাজার। কিছু কিছু সবজির দাম কমেছে বলেও জানান বিক্রেতারা। আগের মতোই বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। এছাড়া ফুলকপি ১০০ টাকা, করলা ৬০, আলু ২৫, শসা ১০০, টমেটো ১২০ এবং কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। অপরিবর্তিত থেকে গরু ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা ও ৮৫০ টাকা কেজিতে।