ক্রীড়া প্রতিবেদক: অভিষেকের পর থেকে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তার। এরই মধ্যে টেস্ট ক্রিকেটে মুশফিকুর রহিমের কেটে গেছে প্রায় ১২ বছর। খেলেছেন ৫১টি ম্যাচ। আলো ছড়িয়েছেন উইকেটের চারপাশে, সঙ্গে উইকেটের পেছনেও। দিয়েছেন টাইগারদের টেস্ট নেতৃত্ব। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছেন ঐতিহাসিক টেস্ট। ২০০৭ সালের পর থেকে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান কখনও সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ছিলেন না একাদশের বাইরে। কিন্তু সাড়ে ৯ বছর পর আজ শুরু হওয়া ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে নেই তিনি। মূলত হাতের চোটই তাকে ছিটকে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড সফরের শেষ টেস্ট থেকে।
২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় মুশফিকের। কিন্তু পরবর্তী দুবছর এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান সাদা পোশাকের ক্রিকেটে নিয়মিত ছিলেন না। খেলেছিলেন মাত্র দুটি টেস্ট। দুটোই আবার ব্যাটসম্যান হিসেবে ছিলেন দলে। সে সময় টাইগারদের অধিনায়ক ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল।
তখন খেলছিলেন হাবিবুল বাশার, যিনি এখন নির্বাচক। জাভেদ ওমর, মোহাম্মদ রফিকরা খেলতেন। টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে তখনও স্বপ্ন দেখতেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সেটি ২০০৭ সাল। ঠিক ওই সময় শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে উইকেটের পেছনে বাজে পারফরমের জন্য খালেদ মাসুদকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যে কারণে দ্বিতীয় টেস্টে জায়গা পেলেন মুশফিক। কলম্বোর পি সারা ওভালে দ্বিতীয় ইনিংসে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান খেললেন ৮০ রানের দারুণ এক ইনিংস। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
২০০৭ সালের জুলাই থেকে এই ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের আগ পর্যন্ত বদলে গেছে অনেক কিছু; কিন্তু বাংলাদেশের টেস্ট দলে মুশফিকের নাম ছিল অবিচল। এ সময়ে খেলেছেন বাংলাদেশের ৪৯ টেস্টের সবকটি। বর্তমান টেস্ট দলে মুশফিক ছাড়া ওই সময়ের আর কেউ নেই। আশরাফুল আছেন এখনও ক্রিকেটে। কিন্তু ম্যাচ ফিক্সিংসে অভিযুক্ত সাবেক এই অধিনায়ক রয়েছেন জাতীয় দলের বাইরে।
মুশফিকের উইকেট কিপিং নিয়ে ২০০৭ সাল থেকেই ছিল সমালোচনা। তারপরও কিপিং গ্লাভস ছাড়েননি তিনি। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি এই ডানহাতি সব সময় উইকেটের পেছনের দায়িত্ব নাকি উপভোগ করেন। এতদিন এটাই বলে এসেছিলেন। নিউজিল্যান্ড সফরে চোটে পড়ার আগে ২০১৫ সালে আঙুলে চোট পেলে তিনটি টেস্টে কিপিং করতে পারেননি মুশি। সে সময় তার জায়গায় উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন লিটন দাস। শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছিলেন তিনি। পরে ফিট হয়ে আবার নিজের করে নেন কিপিং গ্লাভস।
হঠাৎ ইনজুরিতে পড়ায় মুশির অভাবটা ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালোই টের পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টেস্ট সিরিজে ফিরেই ব্যাটিংয়ে দলের হাল ধরে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। খেলেছিলেন ১৫৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। যদিও ওয়েলিংটন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও চোটে পড়েন তিনি। যে কারণে ওই টেস্টে হারতে হয়েছে টাইগারদের। এবার ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট। একাদশে নেই মুশি। তাই এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তার অভাবটা কেমন অনুভব করবে হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
Add Comment