ক্রীড়া প্রতিবেদক : গেল সপ্তাহে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ব্যাট হাতে সুযোগ পেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু এ ডানহাতি ঝড় তোলার আগেই জিতে যায় খুলনা টাইগার্স। গতকাল অবশ্য বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বিধ্বংসী রূপে মেলে ধরার মঞ্চটা পেয়ে যান মুশফিক। সুযোগটা তাই এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হাতছাড়া করেন। রাজশাহী রেঞ্জার্সের বোলারদের বিপক্ষে খেলেন দুর্দান্ত। আশা জাগিয়েছিলেন সেঞ্চুরির। শেষ পর্যন্ত অবশ্য শেষ ওভারে রবি বোপারাকে ছয় হাঁকাতে সীমানায় শোয়েব মালিকের হাতে ধরা পড়েন তিনি। যে কারণে চার রানের আক্ষেপ থেকে যায় তার। তবে খুলনাকে ঠিকই ৫ উইকেটের জয় এনে দিতে দারুণ ভূমিকা রাখেন বগুড়ার এ ক্রিকেটার।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচে ঝড় তুলে রাজশাহী রয়্যালসকে আসরের সর্বোচ্চ ১৮৯ রান এনে দিয়েছিলেন শোয়েব মালিক। তবে মুশফিকুর রহিমের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে সেই রান ২ বল আগেই টপকে যায় খুলনা টাইগার্স।
টি-টোয়েন্টিতে আগের সেরা ৮৬ ছাড়িয়ে গতকাল মুশফিক থামেন ৯৬ রানে। তার ৫১ বলের দুর্দান্ত ইনিংসটি গড়া ৯ চার ও চার ছক্কায়।
গতকাল বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বে টস জিতে বল হাতে শুরুতেই রাজশাহীকে ধাক্কা দেয় খুলনার পেসার মোহাম্মদ আমির। দ্বিতীয় ওভারে তার বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরেন হজরতউল্লাহ জাজাই। এর কিছুক্ষণ পরই একটি করে ছয় ও চারে ১৬ বলে ১৯ রান করে বিদায় নেন লিটন দাস। আফিফও পারেননি তেমন কিছু করতে। দুই ছয়ে ১৯ রান করে শহিদুল ইসলামের বলে ধরা পড়েন শফিউল ইসলামের হাতে। তবে পদ্মাপাড়ের দলটি এগিয়ে যায় শোয়েব মালিকের ব্যাটে। অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান বোপারার সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৬১ বলে উপহার দেন ১০৬ রানের জুটি। সেখানে মালিকের অবদান ৩৮ বলে ৬৬। তবে ১৯তম ওভারে আমিরের বলে ক্যাচ দিয়ে থামেন তিনি। তার আগে এ ডানহাতি করেন ৫০ বলে ৮ চার ও ৪ ছয়ে ৮৭ রান। এদিকে ২৬ বলে দুটি করে ছয় ও চারে বোপারা অপরাজিত থাকেন ৪০ রানে।
এবারের বিপিএলে জিততে খুলনার সামনে ছিল সবচেয়ে বড় লক্ষ্য। যে কারণে দলটি শুরুতেই নাজমুল হোসেন শান্ত ও রহমানউল্লাহ গুরবাজকে হারিয়ে হোঁচট খায়। তবে তৃতীয় উইকেটে ২২ গজে নেমে পরিস্থিতি সামাল দেয় রাইলি রুশো ও মুশফিকুর রহিম। ৫৩ বলে দুজনে উপহার দেন ৭২ রানের জুটি। কামরুল ইসলাম রাব্বিকে স্কুপ করার চেষ্টায় লিটনের গ্লাভসে ধরা পড়ার আগে রুশো করেন ৩৫ বলে ৪২ রান।
রুশো ফিরলেও মুশফিক এক প্রান্তে ছিলেন দুর্দান্ত। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন শামসুর রহমান শুভ। জুটিতে এগিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে ৩০ বলে মুশি তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। এরপর এ ডানহাতি রাজশাহীর বোলারদের ওপর আরও চড়াও হন। শেষ পর্যন্ত ইনিংসে শেষ ওভারের তৃতীয় বলে সীমানায় ক্যাচ হয়ে ফেরেন এ ডানহাতি। এর আগে ২০ বলে ২৯ রান করে বিদায় নেন শামসুর। ভাঙে ৩৪ বলে স্থায়ী ৬১ রানের জুটি। তবে জিততে তেমন সমস্যা হয়নি খুলনার। ২০তম ওভারের চতুর্থ বলে চার হাঁকিয়ে দলটিকে আনন্দে মাতান রবি ফ্রাইলিঙ্ক। তিনি অপরাজিত ছিলেন ১৪ রানে।
চলতি বিপিএলে এখন পর্যন্ত অপরাজিত দল খুলনা। ২ ম্যাচের দুটিতেই জিতেছেন মুশফিকুর রহিমরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাই দলটি পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছিল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৮৯/৪ (লিটন ১৯, জাজাই ১, আফিফ ১৯, মালিক ৮৭, বোপারা ৪০*, রাসেল ১৩*; মিরাজ ২-০-১৭-০, আমির ৪-০-৩৬-২, ফ্রাইলিঙ্ক ৪-০-২৯-১, শহিদুল ৪-০-৩৫-১, আমিনুল ২-০-৩০-০)।
খুলনা টাইগার্স: ১৯.৪ ওভারে ১৯২/৫ (শান্ত ০, গুরবাজ ৭, রুশো ৪২, মুশফিক ৯৬, শামসুর ২৯, ফ্রাইলিঙ্ক ১৪*, শহিদুল ০*; রাসেল ৪-০-৪১-২, রাব্বি ২-০-১৮-১, আফিফ ৩-০-২৪-১, আবু জায়েদ ১-০-৭-০, মালিক ২-০-১৪-০, বোপারা ২.৪-০-৩২-০, কাপালি ৩-০-৩১-০, তাইজুল ১-০-১১-০ ফরহাদ ১-০-১৪-০)।
ফল: খুলনা টাইগার্স ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মুশফিকুর রহিম।
মন্তব্য