ক্রীড়া প্রতিবেদক: যে কোনো ফরম্যাটেই তার ব্যাট নিয়মিতই হাসছে। তবে টেস্ট ক্রিকেটে আরও বেশি সাবলীল তিনি। নিউজিল্যান্ড সফরের পর গতকাল রোববার হায়দরাবাদে ভারতের বিপক্ষে তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। প্রতিবেশী দেশটির মাটিতে প্রথম টেস্ট শতকহাঁকিয়ে দারুণ খুশি তিনি। টেস্টে এটি পঞ্চম সেঞ্চুরি মুশির। এর ফলে ছাড়িয়ে গেলেন মুমিনুল হক ও সাকিব আল হাসানকে। তার উপরে এখন মোহাম্মদ আশরাফুল (৬) ও তামিম ইকবাল (৮)।
টেস্টে পাঁচ সেঞ্চুরি পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন দেশে করেছেন মুশফিকুর রহিম। ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। এরপর শ্রীলঙ্কার মাটিতে দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাদা পোশাকে তুলে নেন ডাবল সেঞ্চুরি। ২০১৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টাইগার টেস্ট অধিনায়ক তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। তবে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের টেস্টে চতুর্থ সেঞ্চুরি পেতে লম্বা সময়ই অপেক্ষা করতে হয়েছে। সদ্যই শেষ হওয়া নিউজিল্যান্ড সফরে তুলে নেন অসাধারণ সেঞ্চুরি। আর গতকাল পঞ্চম সেঞ্চুরিটি করলেন হায়দরাবাদে।
বাংলাদেশের হয়ে তিনটির বেশি দেশে সেঞ্চুরি কারও নেই। তামিমের ৮ সেঞ্চুরির ৫টি বাংলাদেশে, ইংল্যান্ডে দুটি, একটি ওয়েস্ট ইন্ডিজে। আশরাফুলের ৬ সেঞ্চুরির তিনটি দেশে, তিনটি শ্রীলঙ্কায়। সাকিবের চার সেঞ্চুরির দুটি বাংলাদেশে, দুটি নিউজিল্যান্ডে। মুমিনুল হকের চারটিই দেশে। সে হিসেবে পাঁচ দেশে পাঁচটি সেঞ্চুরি করে সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেন মুশি।
নিউজিল্যান্ড সফরের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে গিয়ে পড়েন ইনজুরিতে। তাইতো ওই টেস্ট না খেলেই ফিরে আসেন দেশে। এরপর চোটমুক্ত হয়ে ফিরলেন ভারত সফরের দলে। ব্যাট হাতে নিয়ে প্রতিবেশী দেশটির মাটিতে গতকাল তুলে নিলেন অসাধারণ সেঞ্চুরি। টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান মুশফিক। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম ইকবাল। ২০১৪ সালে আবার টানা দুই টেস্টে এই বাঁহাতি সেঞ্চুরি করেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। মাঝে ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন মুমিনুল।
হায়দরাবাদ টেস্টে সেঞ্চুরি করেই থামেননি মুশফিক। দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে লোয়ার অর্ডারদের সঙ্গে এগিয়ে নিয়েছেন দলকে। অবশেষে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে অশ্বিনের বলে আউট হন ১২৭ রানে। ২৬২ বল, ১৬ চার ও দুটি ছক্কার এ ইনিংস খেলার পথে মুশফিক পেছনে ফেলেন হাবিবুল বাশারকে (৩০২৬)। টেস্টে এখন তিনি দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তার উপরে আছেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান।
টেস্ট ক্যারিয়ারের পাঁচ সেঞ্চুরি পাঁচটি দেশে করে নিজের সীমানাটা যেন আরও বাড়িয়ে নিয়েছেন মুশফিক। হয়তো এমন লড়াকু ব্যাটিংয়ের দেখা মিলবে আগামীতেও। কেননা ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দুটি করে টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ।