মুশফিক নাঈমের রেকর্ড জুটিতে ছন্দে রূপগঞ্জ

ক্রীড়া প্রতিবেদক: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে চলতি মৌসুমে দুর্দান্ত খেলছেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম ম্যাচের মতো গতকাল সোমবারও দলের জয়ে ব্যাট হাতে রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। তার দিনে তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছেন নাঈম ইসলামও। তৃতীয় উইকেটে জুটিতে এ দুজন ২২৫ রান যোগ করে প্রিমিয়ার লিগে গড়েছেন রেকর্ড। মূলত তাদের অনন্য এ কীর্তির ওপর ভর করে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৬৮ রানে হারিয়ে ছন্দ ধরে রেখেছে রূপগঞ্জের দলটি। এদিকে নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরিতে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে আবাহনী। অন্য ম্যাচে আরাফাত সানির ঘূর্ণি ও ইমতিয়াজ হোসেনের ব্যাটে ভর করে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জিতেছে প্রাইম দোলেশ্বর।

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে গতকাল ১৩৪ বলে ১৩৪ রান করেন মুশফিক। অন্যদিকে নাঈম ইসলাম করেন ১১৮ বলে ১০৩ রান। এ দুজনের ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩০৫ রান করে রূপগঞ্জ। জবাবে ৪৬.২ ওভারে ২৩৭ রানে থামে শেখ জামাল।

এর আগে টস জিতে ব্যটিংয়ে নেমে শুরুতেই শাহাদাত হোসেনের বোলিং তোপে মাত্র ১৩ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়েছে রূপগঞ্জ। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে মুশফিক-নাঈমের রেকর্ড জুটি রাজ্জাক-শাহাদতদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। রূপগঞ্জের এ দুই ব্যাটসম্যান যোগ করেছেন ২২৫ রান, যেটি লিস্ট ‘এ’ স্বীকৃতি পাওয়ার পর প্রিমিয়ার লিগে তৃতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ, সব মিলিয়ে দ্বিতীয়। চোখ জুড়ানো সব শটে মুশফিক ১৪ চার আর ১ ছক্কায় করেন ১৩৪ রান। অন্যদিকে মুশিকে সঙ্গ দেওয়া নাঈমের পরিশ্রমী ইনিংসটা বড় স্কোর গড়তে অবদান রেখেছে বেশ।

৩০৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই রূপগঞ্জের বোলিং তোপে পড়ে শেখ জামাল। দলীয় ১০ রানের সময় মাহমুদউল হাসান সাজঘরে ফেরান ইমরুল কায়েসকে। এরপর মোহাম্মদ শরিফ. মোশাররফ হোসেনদের বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দলটি। শেষ পর্যন্ত ৬৮ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।

চলতি প্রিমিয়ার লিগে এটি রূপগঞ্জের টানা দ্বিতীয় জয়। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচ জয়ের পর হার দেখলো জামাল।

এদিকে বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে নিজের প্রথম লিস্ট ‘এ’ সেঞ্চুরি পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। গতকাল পারটেক্সের বিপক্ষে তিনি অপরাজিত থাকেন ৫ চার ও ৪ ছয়ে ১০১ রান করে। টসে জিতে আগে ব্যাট করা পারটেক্সের ২৩৪ রান টপকে যাওয়া আবাহনীর জন্য সহজ হয় নাজমুল আর মাহমুদউল্লাহর ১৫০ রানের জুটির ওপর ভর করেই। মাহমুদউল্লাহ ৫২ বলে করেন ৭৭ রান। শেষ দিকে মোসাদ্দেকের অপরাজিত ২৩ রানে জয় নিশ্চিত হয় আবাহনীর।

পারটেক্সের ২৩৪ রানের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন জুবায়ের হোসেন। ৪৪ রান করেন সাজ্জাদ হোসেন। ভারতীয় ক্রিকেটার যশপাল সিং করেন ৩৩ রান। আবাহনীর হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন ও শুভাগত হোম চৌধুরী।

অন্য ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৪ উইকেটে হারানোয় বল হাতে প্রাইম দোলেশ্বরের আরাফাত সানি রাখেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। বাঁহাতি এ অফস্পিনার প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়ার পর গতকাল ১০ ওভারে ৪৫ রানে নিয়েছেন ৪টি উইকেট। এদিকে ব্যাট হাতে দলটির হয়ে ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন ইমতিয়াজ হোসেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

রূপগঞ্জ: ৫০ ওভারে ৩০৫/৫ (নাঈম ১০৩, মুশফিক ১৩৪, মাশরাফি ১৭, সাকসিনা ২৩*, শরীফ ১৫*; শাহাদাত ২/৫২, রাজ্জাক ২/৬৩, ইলিয়াস ১/৬৩)

শেখ জামাল: ৪৬.২ ওভারে ২৩৭/১০ (মাহবুবুল ৩৬, ফজল ৩৩, জিয়াউর ৪২, গাজী ২৪; শরিফ ২/৩১, মাশরাফি ১/৫০, মোশাররফ ২/৫৬, আসিফ ২/৪০, নাঈম ২/২১)

ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৬৮ রানে জয়ী

ম্যাচ সেরা: মুশফিকুর রহিম

পারটেক্স: ৫০ ওভারে ২৩৪/৭ (সাজ্জাদ ৪৪, তারিক ২৫, যশপাল ৩৩, জুবাইর ৫০, মাসুম ১৩*; তাসকিন ১/৪৬, সাইফুদ্দিন ২/৫৬, শুভগত ২/৪৫, সানজামুল ১/৩০)।

আবাহনী: ৩৮.৩ ওভারে ২৩৭/৩ (শান্ত ১০১*, মাহমুদউল্লাহ ৭৭, মোসাদ্দেক ২৩*; মামুন ১/২০, মাসুম/৪৫, হাফিজ ১/২৭, রাজিবুল ১/৩২)।

ফল: আবাহনী ৭ উইকেটে জয়ী

ম্যাচ সেরা: নাজমুল হোসেন শান্ত

ব্রাদার্স: ৫০ ওভারে ২৪৬/৯ (মিজানুর ৫৬, জুনায়েদ ৮৭, মাইশুকুর ৪৭; সানি ৪/৪৫, শরিফুল্লাহ ২/৪৭, এনামুল ২/৪৫)

দোলেশ্বর: ৪৮.৩ ওভারে ২৪৭/৬( ইমতিয়াজ ৯৯, মজিদ ৪৫, মার্শাল ৩৩, সাইফুল্লাহ ২*, রেজা ১৩*; সাদ্দাম ৩/৫৫, নিহাদুজ্জামান ২/৫০, নাঈম ১/২১)

ফল: দোলেশ্বর ৪ উইকেটে জয়ী

ম্যাচ সেরা: ইমতিয়াজ হোসেন