ক্রীড়া প্রতিবেদক : নতুন গোলাপি বল ফ্লাডলাইটে যেভাবে সাপের মতো ফণা তুলে লাফাচ্ছেÑসেটাই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছে। এমন গতি, এমন উইকেটে যে খেলতে অভ্যস্ত নয় সফরকারীরা! গতকাল ইডেন গার্ডেনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে সেটাই দেখাল মুমিনুল হকের দল। চার উইকেট হারিয়ে যখন দুদিনে টেস্ট হারের শঙ্কা উঁকি দিচ্ছিল, তখন পঞ্চম উইকেটে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ গড়েন প্রতিরোধ। এতে ইডেন টেস্ট গড়াল ৩ দিনে।
গতকাল ইডেন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ৯ উইকেটে ৩৪৭ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। ২৪১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে টিম টাইগার্স। দিন শেষে সফরকারীরা ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৫২ রান। মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৫৯ রানে। এর আগে মাহমুদউল্লাহ (৩৯*) হ্যামট্রিংয়ের চোটে পড়ে ফেরেন।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই দলীয় স্কোর যখন ১৩ রান, তখন টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ঠিক সে অবস্থায় টাইগারদের হাল ধরেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ। শুরুতে মুশি একটু ধীরে খেলছিলেন। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ দারুণ সব শট খেলেন। তাতে তাদের জুটিতে দলীয় স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৬৯ রান।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ে ফিরলে মুশফিকের সঙ্গে যোগ দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। শুরুটা দেখেশুনে করলে পরে এক চার ও এক ছয়ে কিছুটা আত্মবিশ্বাসের পরিচয় দিলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ইশান্ত শর্মার বলে প্রথম সিøপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি (১৫)। প্রথম ইনিংসের মতো আবারও বল হাতে জ্বলে ওঠেন ইশান্ত শর্মা। আর প্রথম পাঁচ উইকেটের ৪টিই নেন তিনি।
ভারতের বিপক্ষে মুশফিকের রেকর্ড সব সময়ই দারুণ। চলতি সিরিজেই ইন্দোর টেস্টে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েলেন তিনি। যদিও ইডেন টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেছিলের শূন্য। তবে গতকাল আর তেমনটা হতে দেননি এ ডানহাতি। দলের বিপদের মুহূর্তে তুলে নেন ৫৪ বলে ৯ চারে ৫০ রান। এ রিপোর্ট লেখার সময়ও দারুণ ব্যাট চালাচ্ছিলেন তিনি।
এর আগে বাংলাদেশের বোলাররা প্রথম দিনের তুলনায় গতকাল ভালো বোলিং করেন। বিরাট কোহলি ক্যারিয়ারের ২৭তম সেঞ্চুরি পেলেও ভারতের শেষদিকের ব্যাটসম্যানদের তেমন সুযোগ দেয়নি সফরকারীরা। আগের দিনের ৩ উইকেটে করা ১৭৪ রানের সঙ্গে গতকাল স্বাগতিকরা আরও ৬ উইকেট হারিয়ে দলীয় স্কোরবোর্ডে যোগ করে ১৭৩ রান।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর বাংলাদেশের বোলাররা সাফল্য দেখান। প্রথম ওভারেই আবু জায়েদ রাহীর বলে বোল্ড রবীন্দ্র জাদেজা। ৮১ ওভারের সময় নতুন বল হাতে নিয়েই আরও বড় সাফল্য বাংলাদেশের। এবার এবাদতের বলে আউট বিরাট কোহলি। ফাইন লেগে দুর্দান্ত ক্যাচটি ধরেন তাইজুল ইসলাম। ১৩৬ রান করে বিরাট কোহলির আউটের পর ভারতের ইনিংস হুড়মুড়িয়ে পড়তে শুরু করে। যা দেখে স্বাগতিক অধিনায়ক ৯ উইকেটে ৩৪৭ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা দেন। এবাদত ও আল-আমিন তিনটি করে উইকেট পান। ২ উইকেট পকেটে পোরেন আবু জায়েদ। আর এক উইকেট নেন তাইজুল।