Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 7:33 pm

মুড়ি বিক্রি করে স্বাবলম্বী

যে কোনো উদ্যোগের শুরুতে আসে অনেক বাধা-বিপত্তি। এসব গায়ে না মেখে লেগে থাকলে সফল হওয়া যায়। যারা সফল হন, তাদের অনুসরণ করলে আরও নতুন উদ্যোগ শুরু হয়। নানা খাতের সেসব সফল উদ্যোক্তাকে নিয়ে ধারাবাহিক আয়োজন

মুড়ি তৈরিতে জুড়ি নেই তার। ফুরসতও নেই তার। কেননা তার হাতে তৈরি মুড়ি খেতে অনেক সুস্বাদু, অনেক  মুখরোচকও বটে। তাই আশিদা বেওয়া বিরামহীন মুড়ি ভাজা, বিক্রি প্রভৃতিতে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন।

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের খালিশা গ্রামের মৃত মতিয়ার রহমানের স্ত্রী আশিদা বেওয়া। বয়স ৫১। আশপাশের পাঁচ গ্রামের মধ্যে তিনি একাই মুড়ি ভাজেন। ভোরের আজান শুনে মুড়ি ভাজতে বসেন।

তিন সন্তানের জননী আশিদার স্বামী কুড়ি বছর আগে মারা যান। তিনি ছিলেন গ্রামের ছোট গৃহস্থ। মৃত্যুকালে তিনি কোনো সহায়সম্বল রেখে যাননি। এ অবস্থায় তিন সন্তানকে নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন আশিদা। এক মেয়ে দুই ছেলে নিয়ে তার সংসার।

তার মুখেই শোনা গেল অভাব জয়ের গল্প। তিনি বলেন, আমার কোনো পুঁজি ছিল না, কিন্তু জানতাম কীভাবে মুড়ি তৈরি করতে হয়। একদিন পাশের বাড়ির গৃহিণী হামিদা বেগম আমাকে দিয়ে দুই কেজি চালের মুড়ি তৈরি করিয়ে নেন। এজন্য পারিশ্রমিক হিসেবে ৫০ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। তিনি আরও জানান, নিজেকে স্বাবলম্বী করতে ওই ৫০ টাকা দিয়ে দেড় কেজি চাল কিনে শুরু করেন মুড়ি ভাজার কাজ। এরপর আর পেছন ফেরে তাকাতে হয়নি তাকে। দেশীয় পদ্ধতিতে চুলায় মুড়ি ভাজেন তিনি। এ ধরনের মুড়ি স্বাস্থ্যসম্মতও বটে।

প্রতিদিন দুই থেকে বিশ কেজি মুড়ি ভাজার অর্ডার পান তিনি। মুড়ি বিক্রির টাকায় সংসার চালিয়েছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়েছেন।

 

তৈয়ব আলী সরকার, নীলফামারী