মূলত এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা এবং সাধারণ ব্যাংকিং সেবার মধ্যে কোন তারতম্য নেই

সৈয়দ মিজানুর রহমান ২৫ বছরেরও অধিক সময় ব্যাংকিং সেক্টরে কর্মরত আছেন। তাঁর নেতৃত্বে এবি ব্যাংকে রিটেইল ব্যাংকিং ডিভিশন, এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশন এবং বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ইউনিট প্রতিষ্ঠিত হয়। এবি ব্যাংকে যোগদানের আগে তিনি ঢাকা ব্যাংক, আইপিডিসি, ব্যাংক আল ফালাহ এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। তিনি ব্রাঞ্চ ব্যাংকিং, রিটেইল ব্যাংকিং, প্রসেস ট্রান্সফরমেশন, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এবং কর্পোরেট কমিউনিকেশনের উপর বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (মেজর ইন ফিনান্স) থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সম্ভবনা নিয়ে কথা বলেছেন আমাদের প্রতিবেদক নজরুল ইসলামের সঙ্গে।

শেয়ার বিজ : দেশের কতটি উপজেলায় আপনাদের এজেন্ট ছড়িয়ে পড়ছে?
সৈয়দ মিজানুর রহমান : বাংলাদেশের ৪৯২ টি উপজেলা আছে। আমরা চেষ্টা করছি প্রতিটি উপজেলায় আমাদের সেবা পৌঁছে দিতে। বর্তমানে আমাদের ১০৫ টি উপজেলায় উপস্থিতি রয়েছে।

শেয়ার বিজ : দৈনিক বা মাসিক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কি পরিমাণ লেনদেন হচ্ছে?
সৈয়দ মিজানুর রহমান : প্রতিমাসে আমাদের এজেন্ট আউটলেটের মাধ্যমে গ্রাহক লেনদেনের পরিমাণ প্রায় শত কোটি টাকা।

শেয়ার বিজ : মাসে কি পরিমাণ ঋণ বিতরণ করেন গ্রাহকদের মাঝে?
সৈয়দ মিজানুর রহমান : আমরা সীমিত আকারে ইতিমধ্যেই এই সেবা চালু করেছি। খুব শীঘ্রই আমরা বৃহৎ পরিসরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দ্বারপ্রান্তে এই সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য উদ্যোগ নিচ্ছি।

শেয়ার বিজ : বর্তমানে আপনাদের গ্রাহক সংখ্যা কত?
সৈয়দ মিজানুর রহমান : আমাদের আমানতকারীদের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজার।

শেয়ার বিজ : গ্রাহকদের জন্য নতুন কোনো সেবা চালু করার পরিকল্পনা আছে কিনা?
সৈয়দ মিজানুর রহমান : আমরা চাই আমাদের এজেন্ট আউটলেট গুলো গ্রাহকদের সকল সেবা সমূহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হোক। এই লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। সেবার পরিধি বাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি যেমন ঘরে বসেই অ্যাকাউন্ট খোলা EKYC, ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ, কৃষি ঋণ এবং SME ঋণ ইত্যাদি । এছাড়াও অন্যান্য দৈনন্দিন সেবা সমূহ যেমন ই-কমার্স সেবা অনলাইন টিকেটিং সেবা ইত্যাদি কার্যক্রম চালু করার চিন্তা ভাবনা করছি।

শেয়ার বিজ : এ খাতের আরও উন্নতি করার জন্য কী কী করা প্রয়োজন মনে করেন?
সৈয়দ মিজানুর রহমান : ব্যাংকিং একটি বিশ্বস্ততার বিষয় যেখানে এজেন্টদের বিশ্বস্ততা এবং আস্থার জায়গা তৈরি করাটা জরুরী । এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিশেষভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে । আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে স্কুল ব্যাংকিংকে জনপ্রিয় করার জন্য এবং মানুষের আস্থা অর্জন করার জন্য ব্যাংকগুলো প্রতিটা জেলাভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছিল যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকেরও একটি সক্রিয় ভূমিকা ছিল । একইভাবে আমরা এজেন্ট ব্যাংকিং এর জন্য সকল ব্যাংক মিলে জেলাভিত্তিক কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারি, বাংলাদেশ ব্যাংক এখানেও একটি বড় ধরনের ভূমিকা পালন করার সুযোগ আছে বলে আমরা মনে করি । এর ফলে গ্রাহকের আস্থা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে এবং এজেন্ট ব্যাংকিং আরো জনপ্রিয় হবে । এজেন্ট ব্যাংকিং জনপ্রিয় হলে এজেন্টরা লাভবান হবে আমাদের একটা কথা স্মরণ রাখতে হবে এজেন্ট বাঁচলেই ব্যাংক বাঁচবে।

শেয়ার বিজ : এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লাভ হচ্ছে নাকি লোকসান?
সৈয়দ মিজানুর রহমান : মূলত ব্যাংক একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, যার মুল লক্ষই হলো মুনাফা বৃদ্ধি করা। এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসারও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে এই মুহূর্তে আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যাংকিং সেবা যথাযোগ্যভাবে পৌঁছে দেওয়া। আমাদের এই প্রাথমিক লক্ষ্য অর্জিত হওয়ার পরে মুনাফা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করার সুযোগ পাবো বলে মনে করছি।

শেয়ার বিজ : এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আপনাদের কি পরিমাণ প্রবাসী আয় আসে?
সৈয়দ মিজানুর রহমান : আমরা সংখ্যার চেয়ে মানসম্পন্ন সেবায় বিশ্বাস করি। আমরা আরো মনে করি এজেন্ট ব্যাংকিংকে জনগণের কাছে একটি বিশ্বস্ততার জায়গায় পৌঁছে দেয়া প্রয়োজন । যে লক্ষে আমরা শুরু থেকেই আমাদের এজেন্ট আউটলেট গুলোতে একটি নির্দিষ্ট মান বজায় রাখার চেষ্টা করেছি, যাতে করে এজেন্ট আউটলেট গুলো ব্যাংকিং সেবার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা এবং একই সাথে গুণগতমান বজায় রাখতে পারে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০