মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

 

মূল্যস্ফীতি যাতে অনেক বেশি বেড়ে না যায় সেটি সরকারকে খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এককভাবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নেয় যাতে করে মানি মার্কেটের মাধ্যমে ক্যাপিটাল মার্কেটে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন আইসিএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হোসেন, এফসিএ এবং ডেইলি স্টারের বিজনেস এডিটর মো. সাজ্জাদুর রহমান।
মাহমুদ হোসেন বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য বেশ ভালো কাজ হচ্ছে এবং অর্থনীতিও এগোচ্ছে। রাস্তাঘাটসহ দেশের সব খাতেই ভালো কাজ হচ্ছে। তাছাড়া নির্বাচনের বছর জনগণের প্রত্যাশা বেশি থাকে এবং সবসময়ই নির্বাচনের বছরে দৃশ্যমান কাজগুলো বেশি হয়। তবে অন্যান্য বেশিরভাগ দেশের তুলনায় আমাদের দেশের প্রকল্প নির্মাণ ব্যয় অনেক বেশি হচ্ছে এবং তা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পাড়ছি। তাই এ ব্যাপারটি সরকারের আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করি। এছাড়া সরকারি ব্যয় যখন বাড়ে তখন স্বাভাবিকভাবেই মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) হার যখন ভালো থাকে তখন মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়বে সেটি আমাদের মেনে নিতেই হবে। কিন্তু মূল্যস্ফীতি যাতে অনেক বেশি বেড়ে না যায় সেটি সরকারকে খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এককভাবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নেয় যাতে করে মানি মার্কেটের মাধ্যমে ক্যাপিটাল মার্কেটে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অন্যদিকে সরকারি খাতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ বাড়ছে সেদিক বিবেচনায় বেসরকারি খাত ওই হারে বাড়ছে না। বেশ কয়েক বছর যাবৎ বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি প্রায় একই জায়গায় সীমাবদ্ধ আছে। গত বছর ঋণের ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল কিন্তু সে হারে শিল্পায়নের প্রবৃদ্ধি হয়নি। তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে টাকাটি কোথায় গেল আর এ বিষয়টিও চিন্তা করা দরকার।
মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে অর্থনীতির জন্য নির্বাচনের বছর একটি বিশেষ সময়। এ সময় নতুন বিনিয়োগ থেকে বিনিয়োগকারীরা অনেক সতর্ক থাকেন এবং ক্যাপিটাল মার্কেটসহ সব খাতেই এক ধরনের সতর্কতা বিরাজ করেতে দেখা যায়। দেশের অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছে এবং তা অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৭৫০ ডলার এবং দেশের দারিদ্রের হারও কমছে। ২০০০ সালে দেশের দারিদ্রের হার ৫০ শতাংশ ছিল বর্তমানে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তা ২০ থেকে ২২ শতাংশে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন কারণে নির্বাচনি বছরে সরকারি ব্যয় বাড়ে কিন্তু বেশ কয়েক বছর যাবৎ উন্নয়নের ধারা এ সরকার অব্যাহত রেখেছে। তারা অনেক মেগা প্রজেক্ট নিয়েছে এবং সেগুলোর বাস্তবায়নও করছে। সব মিলিয়ে ব্যাংক খাত বাদে দেশের অর্থনীতি ভালোই আছে বলে মনে করি। তবে আমাদের দেশে ব্যাংক খাত অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখে কারণ এ খাতের ওপর প্রায় সবকিছুই নির্ভরশীল। কোনো ঋণ বা যে কোনো কিছুর জন্য সবাই ব্যাংককের ওপর নির্ভর করে। কারণ দেশে বন্ড মার্কেট নেই সঙ্গে ক্যাপিটাল মার্কেটও অতটা উন্নত নয়। ভালো কোনো কোম্পানি ক্যাপিটাল মার্কেটে যেতে চায় না। ব্যাংক খাতে একটার পর একটা সমস্যা লেগেই আছে। কাজেই এ বিষয়টি নিয়ে সবার অনেক বেশি সচেতন হতে হবে তা না হলে দেশের অর্থনীতি একটি ঝুঁকির মধ্যে থাকবে বলে মনে করি।

শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০