নিজস্ব প্রতিবেদক: ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মানিপ্লান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের সাবেক গাড়িচালক সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এদিকে সোয়া ১১ কোটি টাকা লুটের ঘটনায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি হƒদয় ও মিলন। এ নিয়ে ৯ জন ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে আসামি সোহেল রানা শিশিরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গত শুক্রবার সাভারের হেমায়েতপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুপুরে ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে তিন মূল পরিকল্পনাকারীর মধ্যে আকাশকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
তিনি বলেন, গোপন তথ্য ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে সোহেল রানাকে ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১২ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। আর উদ্ধার হয়েছে ৭ কোটি ৮৯ লাখ ৬ হাজার টাকা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহƒত একটি নোয়াহ গাড়ি।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার পরিকল্পনায় ছিলেন তিনজন। এদের একজন সোহেল রানা। যিনি এক সময় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী প্রতিষ্ঠান মানিপ্লান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডে চালক হিসেবে কাজ করতেন।
গতকাল শনিবার রিমান্ড চলাকালে আসামি হƒদয় ও মিলনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় তারা ছিনতাইয়ের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোস্তফা রেজা নুর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আসামি সোহেল রানা শিশিরকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোস্তফা রেজা নুর তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদীর আদালতে আসামি ইমন ওরফে মিলন, সানোয়ার হোসেন ও বদরুল আলম দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তার আগে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম আসামি মিজানুর রহমান ও সোনা মিয়া এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরী আসামি আকাশ ও সাগর মাতুব্বরের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৯ মার্চ সকালে উত্তরা থেকে বেসরকারি ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী গাড়ি থেকে প্রায় সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাই হয়। দিনের আলোয় রাস্তা থেকে নজিরবিহীন এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে মাঠপর্যায়ে অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে উত্তরা এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া ৪টি ট্রাংকের মধ্যে ৩টি উদ্ধারের কথা জানায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওইদিন রাতেই মানিপ্লান্ট লিংকের পরিচালক আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে ডিএমপির তুরাগ থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়।