নিজস্ব প্রতিবেদক: মূল্য সংযোজন কর নিয়ে রফতানিকারকদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ডিএইচএলের মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। বিদেশ থেকে ডকুমেন্ট ও পার্শ্বেল আনার ক্ষেত্রে ফির ওপর ১৫ শতাংশ মূসক আদায় করে ডিএইচএল। সম্প্রতি ওই সেবাকে ‘বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমার বাইরে থেকে গৃহীত সেবা’ উল্লেখ করে মূসক প্রদানে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন রফতানিকারকরা। এ বিষয়ে মতামত চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি পাঠিয়েছে ডিএইচএল।
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এনবিআরের মূসক নীতি বিভাগের সদস্য বরাবর পাঠানো ওই চিঠির তথ্যমতে, ডিএইচএলের মাধ্যমে বাংলাদেশি শতভাগ রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠান থেকে বিদেশে নমুনা, ডকুমেন্ট বা পার্শ্বেল পাঠানোর ক্ষেত্রে এনবিআরের ২০১২ সালের নির্দেশনা মেনে সার্ভিস ফির ওপর কোনো মূসক নেওয়া হয় না। কারণ সেবাটি বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমার বাইরে থেকে গৃহীত হওয়ার কারণে ফির ওপর মূসক অব্যাহতি রয়েছে। তবে বিদেশ থেকে কোনো ডকুমেন্ট বা পার্শ্বেল এলে তা ওই নির্দেশনার আওতামুক্ত হওয়ায় ফির ওপর ১৫ শতাংশ মূসক আদায় করা হয়। ডিএইচএলের কাছ থেকে প্রতি মাসে গড়ে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব পায় এনবিআর।
২০১৪ সালের ৫ জুন মূসক বিষয়ে এনবিআরের নতুন নির্দেশনার (এসআরও নং-১১০-আইন/২০১৪/৭০৫) পর ওই সেবাকেও ‘বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমার বাইরে থেকে গৃহীত’ সেবার আওতায় আনার দাবি তুলছেন রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলো। অন্যদিকে এ বিষয়ে ডিএইচএলের দেওয়া ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সেবা গ্রহণকারী রফতানিকারকদের সঙ্গে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ঋণপত্র বা চুক্তি, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় ফি পরিশোধ করা হলে, সেই সেবাটিকেই ‘বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমার বাইরে থেকে গৃহীত’ বলে গণ্য করা হয়। তাই কোনো পূর্ব চুক্তি বা এলসি না করে বিদেশ থেকে ডকুমেন্ট বা পার্শ্বেল এলে ও বাংলাদেশি মুদ্রায় সার্ভিস ফি পরিশোধ করা হলে সেই সেবা ‘বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমার বাইরে থেকে গৃহীত’ নয়। সে কারণেই এনবিআরের নির্দেশনা মেনেই মূসক নেওয়া হয়।
তবে প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া ব্যাখ্যা আমলে নিচ্ছে না রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। ডিএইচএলের ব্যাখ্যা মেনে মূসক প্রদানে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। চট্টগ্রাম ইপিজেডের একটি প্রতিষ্ঠান এনবিআরের চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সার্কেল অফিস থেকে জারি করা নির্দেশনার বরাত দিয়ে ‘মূসক অব্যাহতিযোগ্য’ বলে দাবি করেছে। তাই জটিলতা দূর করার জন্য গত ৯ ফেব্রুয়ারি এনবিআরের মূসক নীতি বিভাগের সদস্যের কাছে মতামত চেয়ে চিঠি দেয় ডিএইচএল। তা না হলে চলতি বছরে এ ধরনের ইনবাউন্ট শিপমেন্টের ওপর মূসক দিতে পারবে না বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
মূসক নিয়ে বিরোধে রফতানিকারক-ডিএইচএল

Add Comment