শেয়ার বিজ ডেস্ক: মেক্সিকোর মন্টেরে শহরের ম্যান ওয়াহ ফার্নিচার ফ্যাক্টরিতে তৈরি বিলাসবহুল ও আরামদায়ক সোফার মূল বাজার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ালমার্ট ও কস্টকোয়। এসব পণ্যের গায়ে ‘মেড ইন মেক্সিকো’ লেখা থাকলেও ম্যান ওয়াহ কোম্পানিটি চীনের মালিকানাধীন। এমন কয়েক ডজন চীনা কোম্পানি রয়েছে মেক্সিকোয়, যাদের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। খবর: বিবিসি।
মেক্সিকোর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে এসব কোম্পানি গড়ে তুলেছে চীন। এতে পরিবহন খরচ কমছে। তাছাড়া পণ্যগুলো পুরোপুরি মেক্সিকান হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধে ওয়াশিংটন চীনা কোম্পানিগুলোর ওপর যে নিষেধাজ্ঞা ও কর আরোপ করেছে, সেটি এড়াতে পারছে চীন।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মেক্সিকোর মধ্যকার এই ত্রিমুখী বাণিজ্য সম্পর্ককে ‘নিয়ারশোরিং’ নাম দেয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক ও লজিস্টিক দিক চিন্তা করেই মেক্সিকোয় এসব কারখানা নির্মাণ করা হয়েছে। ভিয়েতনাম পরিমাণ পণ্য উৎপাদন করে, সেই পরিমাণ এখানেও উৎপাদন করা হয়।
নিয়ারশোরিং মেক্সিকান অর্থনীতিতে দারুণ ভূমিকা রাখছে। গত বছরের জুন পর্যন্ত মেক্সিকোর মোট রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে, যার অর্থমূল্য প্রায় পাঁচ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। এই ধারা কমার কোনো লক্ষণ নেই। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসেই মেক্সিকোয় যে পরিমাণ পুঁজি বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে, তা ২০২০ সালের মোট বিনিয়োগের প্রায় অর্ধেকের সমান।
মেক্সিকোর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক অ্যাসোসিয়েশন (এএমপিআইপি) জানিয়েছে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত নির্মাণাধীন মেক্সিকোর সব সাইট এরই মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। অনেক মেক্সিকান অর্থনীতিবিদ ঘোষণা দিয়েছেন, দেশটিতে চীনের এই আগ্রহ সাময়িক কোনো বিষয় নয়।
মেক্সিকোর সাবেক ফরেন ট্রেড ভাইস মিনিস্টার হুয়ান কার্লোস বাকের পিনেদা বলেন, যেসব কাঠামোগত কারণে মেক্সিকোয় বিনিয়োগ আসছে তার পরিবর্তন হবে না। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য সংঘাত খুব সহসা মিটে যাওয়ার কোনো লক্ষণ আমি দেখি না।
মেক্সিকোর কিছু অংশে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যার অন্যতম কারণ নিয়ারশোরিং বলে মনে করা হচ্ছে। এর কারণ যুক্তরাষ্ট্রও মেক্সিকোয় কারখানা নির্মাণ করছে, যার মধ্যে কিছু এশিয়া থেকে সরিয়ে আনছে তারা। এরই মধ্যে মন্টেরের বাইরে টেসলার একটি বিশাল ফ্যাক্টরি নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন টেসলাপ্রধান ইলন মাস্ক।
